You dont have javascript enabled! Please enable it!

জিলবাড়ি গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর)

জিলবাড়ি গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর) সংঘটিত হয় ১০ই নভেম্বর। এদিন পাকিস্তানি সেনারা ১৮ জন মানুষকে হত্যা করে।
বেলুয়া নদীর পূর্ব পাড়ে স্বরূপকাঠি উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের জিলবাড়ি গ্রাম। এর পশ্চিম পাড়ে নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া বাজার। নদীর তীরে একটি সিড স্টোরে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। স্থানীয় রাজাকারদের মাধ্যমে পাকবাহিনী এ খবর জানতে পারে। ১০ই নভেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যরা রাজাকারদের দেখানো পথে জিলবাড়ি ঘাটে গানবোট ভেড়ায়। তারা মর্টারশেল দিয়ে আঘাত হানে। সিড স্টোরের দেয়াল ছিদ্র হয়ে যায়, যা এখনো দৃশ্যমান। জিলবাড়িতে নেমেই তারা তাণ্ডবলীলা শুরু করে। তারা গ্রামের সাধারণ মানুষদের যাকে যেখানে পায় সেখানেই হত্যা করা শুরু করে। একই সঙ্গে তারা লুণ্ঠন এবং নারীনির্যাতন করে। এ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ১২ বছর বয়সী মো. শহীদুল ইসলাম বাহাদুর (বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক, ফজিলা রহমান মহিলা কলেজ)। তিনি ঘরের দোতলা থেকে গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। গণহত্যার পর পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি ফিরে এসে আ. সোবাহানের রক্তাক্ত লাশ, প্রতিবন্ধী আ. খালেকের লাশ এবং তার দাদী তারা বেগমের লাশ দেখতে পান। ফরজ আলীর পুত্র আমজাদ হোসেন পুকুরে নেমে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে ছিলেন। মাথার ওপর কচুরিপানা দিয়ে নিজেকে ঢেকে রাখলেও পাকসেনারা তাকে দেখে ফেলে। হানাদারদের বুলেটে তিনি শহীদ হন। এ গণহত্যায় শহীদ আ. খালেকের ভাই আ. রহমান গুলবিদ্ধ হয়ে বেঁচে যান।
জিলবাড়ি গণহত্যায় ১৮ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। তারা হলেন— জিলবাড়ি গ্রামের কাসেম আলী (পিতা ফয়জুদ্দীন), আ. রহমান (পিতা মোবারক আলী), হাসেম আলী (পিতা আরজ আলী), আ. সোবাহান (পিতা কাসেম আলী), আ. খালেক (পিতা ছুটি মাহমুদ), আমজাদ হোসেন (পিতা ফরজ আলী), মুজাহার আলী (পিতা বদর উদ্দীন), কাবারেক আলী খা (পিতা মোহন খা), রাজাবাড়ি গ্রামের তারা বেগম (স্বামী ইছামদ্দিন), সুন্দর আলী চৌকিদার (পিতা হাসেম আলী চৌকিদার), মো. গহুর আলী (পিতা মো. হোসেন আলী), মো. আজিজ (পিতা মো. সলেমান), মো. আফসার আলী (পিতা মোহাম্মদ আলী), মো. বাবু লাল (পিতা মো. সুন্দর আলী), মো. আব্দুল আজিজ (পিতা আলকাজ উদ্দীন), মো. হেলাল উদ্দীন (পিতা মো. বদর উদ্দীন), মো. জোনাব আলী (পিতা মো. এন্দে আলী) ও আ. আজিজ (পিতা সাহসের আলী, বিন্না)। [হাবিবুল্লাহ রাসেল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!