You dont have javascript enabled! Please enable it!

জুজখোলা গণহত্যা (পিরোজপুর সদর)

জুজখোলা গণহত্যা (পিরোজপুর সদর) ২০শে মে সংঘটিত হয়। রাজাকার মানিক খন্দকারের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডে ১২ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন।
২০শে মে পাকিস্তানি সৈন্যদের একটি বিশাল দল গানবোটে বলেশ্বর নদীর তীরে এসে নামে। এরপর তারা সকাল ১১টায় যোগের আগা গ্রামে প্রবেশ করে। চারদিকে পানি তখন থৈ থৈ করছে। এ পানি ভেঙ্গেই পাকবাহিনীর একটি দল পথে আইউব আলী মেম্বরের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর মানিক খন্দকার তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে। ঐদিন পিরোজপুরের কদমতলায় পাকবাহিনীর অপারেশন করার কথা ছিল। রাজাকার মানিক খন্দকার হানাদার বাহিনীকে জুজখোলার রাশেদ মোল্লার বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করেই হানাদাররা পুরুষদের ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসে। এরপর এক-এক করে ১২ জন নিরপরাধ মানুষকে গুলি হত্যা করে। একই সঙ্গে তারা লুণ্ঠন শেষে বাড়িঘরে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। জুজখোলা গণহত্যায় শহীদ গ্রামবাসীরা হলেন— যোগের আগা গ্রামের আ. জব্বার শেখ (পিতা মফেজ উদ্দিন শেখ), আফসার শেখ (পিতা তাছেল উদ্দিন শেখ), ইসমাইল শেখ (পিতা তোফেল উদ্দিন শেখ), আব্দুল ওয়াহেদ শেখ (পিতা তোরাব আলী শেখ), মহসিন আলী মোল্লা (পিতা রাশেদ মোল্লা), তবেজান মোল্লা (পিতা রাশেদ মোল্লা), ইউনুছ মোল্লা (পিতা মহসিন মোল্লা), হেমায়েত মোল্লা (পিতা তবেজান মোল্লা), আরজ শেখ (পিতা এজাজ শেখ), সুলতান শেখ (পিতা আদেল উদ্দিন শেখ), সাহেব আলি শেখ (পিতা সাইজুদ্দিন শেখ) ও হাবিব শেখ (পিতা ইয়াছিন শেখ)। আনসার আলী শেখ এ গণহত্যার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তার পিতা আ. জব্বার শেখ ও চাচা হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যার শিকার হন। চারদিকে পানি থাকায় তিনিসহ কয়েকজন মিলে কষ্ট করে উইয়ের ডিবিতে লাশগুলো সমাহিত করেন। শহীদ তবেজান মোল্লা, হোমায়েত মোল্লা, মহসিন মোল্লা ও ইউনুছ মোল্লাকে এক কবরে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পিরোজপুরের জুজখোলা গণহত্যা একটি নৃশংস ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। স্বাধীনতার এত বছর পরেও শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে এখানে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। [মো. মাসুদুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!