জাম্বুরি মাঠ পাওয়ার স্টেশন অপারেশন (চট্টগ্রাম)
জাম্বুরি মাঠ পাওয়ার স্টেশন অপারেশন (চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় ২৫শে নভেম্বর। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার জাম্বুরি মাঠের (বর্তমান সিএন্ডবি কলোনি) কাছে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল। তার পাশে ছিল পাকবাহিনীর একটি ক্যাম্প। এ ক্যাম্পে সাধারণ মানুষদের, বিশেষত নারীদের ধরে এনে পাকসেনারা নির্যাতন করত। ফলে এলাকার মানুষের তীব্র আক্রোশ ছিল পাকসেনা ও তাদের স্থানীয় দোসরদের প্রতি। মুক্তিযোদ্ধারা এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও তৎসংলগ্ন পাকবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফর উল্লাহ, বোরহান উদ্দিন ও মফিজুর রহমান এ অপারেশনে অংশ নেন। তাঁদের সহায়তা করেন স্থানীয় পানের দোকানদার ইউনুছ মিয়া। তিনি অপারেশনের দিন রাতে মিষ্টি পানের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পাওয়ার স্টেশনে পাহারারত সৈনিকদের খাইয়ে দেন, যাতে দ্রুত তাদের ঘুম পায়।
গেরিলা যোদ্ধারা রাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারটি ট্রান্সমিটারে বিস্ফোরক স্থাপন করেন। তারপর তাঁরা নিরাপদ দূরত্বে সরে আসার পর প্রচণ্ড শব্দে ট্রান্সমিটারগুলো বিস্ফোরিত হয়। এতে পার্শ্ববর্তী অনেক ভবনের দেয়াল ধসে পড়ে। ঘটনাস্থলে ৮ জন পাকসেনা নিহত ও অনেকে আহত হয়। দেয়াল ধসে কুখ্যাত দুই রাজাকার জুম্মন খান ও আবেদন খান নিহত হয়। এরপর পাকবাহিনী এখান থেকে তাদের ক্যাম্প তুলে নেয়। মুক্তিবাহিনীর এ অপারেশনের ফলে এলাকার মানুষ পাকবাহিনীর নির্যাতন থেকে মুক্তি পায়। [সাখাওয়াত হোসেন মজনু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড