জারিয়া বধ্যভূমি (পূর্বধলা, নেত্রকোনা)
জারিয়া বধ্যভূমি (পূর্বধলা, নেত্রকোনা) নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায় অবস্থিত। কংস নদীর তীরে অবস্থিত এ বধ্যভূমিতে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা অনেক সাধারণ মানুষকে হত্যা করে।
জারিয়া রেল স্টেশনের বিশ্রামাগারে পাকিস্তানি সেনাদের অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল। এর দায়িত্বে ছিল পাকিস্তানি সুবেদার সাজি। ট্রেনের কোনো যাত্রীকে সন্দেহ হলে সুবেদার সাজি তাকে ধরে এনে শারীরিক নির্যাতন করত। পরে জারিয়া বধ্যভূমিতে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিত। এ বধ্যভূমির পাশে ছিল সাদামাটি সুধনাগার। সেখানেও প্রতিদিন সাধারণ মানুষদের ধরে এনে নির্যাতন চালাত এবং নির্যাতন শেষে হত্যা করত।
স্থানীয় লোকদের প্রায় সবাই তখন জীবন রক্ষার জন্য এখান থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল। এখানে নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- উপেন্দ্র চন্দ্র দাস (হাঠধলা, ইউনিয়ন আগিয়া), সুবোধ চন্দ্ৰ দাস (হাঠধলা, ইউনিয়ন আগিয়া), নিশিকান্ত দাস (বারধার), অশ্বিনী কান্ত দাস (বারধার), আবদুল কাদির (খারছাইল), আছর আলী (নাটেরকোণা), জলধর সূত্রধর (বারধার), ব্রজেন্দ্র বর্মণ (বাড়া), আবদুল খালেক (বাড়া), সদরজমা খাঁ (জারিয়া পূর্বপাড়া) ও সবদুল বিশ্বাস (জারিয়া পূর্বপাড়া)। আবু সিদ্দিক আহমেদ (ধোবারোহী, ইউনিয়ন বিশকাকোনী) জালশুকা রেল স্টেশনের পূর্বপাশে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালাতে গিয়ে ধরা পড়েন। শারীরিক নির্যাতন শেষে পাকসেনারা তাঁকে জারিয়া বধ্যভূমিতে গুলি করে হত্যা করে। [আলী আহাম্মদ খান আইয়োব]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড