You dont have javascript enabled! Please enable it! জাহানাবাদ গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

জাহানাবাদ গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর)

জাহানাবাদ গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় এপ্রিল মাসে। এতে অনেক সাধারণ মানুষ হত্যার ধিকার হয়।
পার্বতীপুর উপজেলার তিলাই নদীর তীরে চণ্ডীপুর ইউনিয়নে জাহানাবাদ গ্রাম অবস্থিত। উপজেলার নিকটবর্তী এ গ্রাম কালেকাপাড়া (বর্তমান সৈয়দ নগর), চকপাড়া, মণ্ডলপাড়া, ঠাকুরবাড়ি, মামুনপাড়া, পোকড়পাড়া ও দক্ষিণপাড়া নিয়ে গঠিত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দৃঢ় সমর্থনের কারণে এ গ্রামের মানুষ বিহারি, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পার্বতীপুর উপজেলায় অনুপ্রবেশের পর থেকে জাহানাবাদের মানুষের জীবনে ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসে। হানাদার বাহিনী হঠাৎ করে জাহানাবাদ গ্রামে আক্রমণ করে। তারা সৈয়দুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ, আব্দুল বাকি, আব্দুর রশিদ, মোজাহার আলী, আফসার আলী, আব্দুস সাত্তার, রহমতুল্লাহ সহ অনেকের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন এবং গণহত্যা চালায়। জাহানাবাদ গ্রাম গণহত্যায় সৈয়দুল ইসলাম (পিতা থাউয়া মোহাম্মদ, কালেকাপাড়া- জাহানাবাদ), ওসা মোহাম্মদের দুই পুত্র বাংগু ও সাংগু, আব্দুল বাকি (পিতা দবিরউদ্দিন, চকপাড়া), অফুরউদ্দীন হাজী প্রমুখ নিহত হন। সৈয়দুল ইসলাম নিজ বাড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ হন। গুলি তার পিঠে লেগে বুক চিড়ে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে-সঙ্গে তিনি মারা যান। বাংগু ও সাংগুকে জবাই করে হত্যা কার হয়। আফুরউদ্দীন হাজীকে হত্যা করা হয় ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে। এভাবে জাহানাবাদের বহু লোক নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, নীপিড়নের শিকার হন। স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে সৈয়দুল ইসলামের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য কালেকাপাড়ার নামকরণ করা হয় ‘সৈয়দ নগর’। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড