গাজীপুর জেলার চান্দনা চৌরাস্তায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম ভাস্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী
জাগ্রত চৌরঙ্গী (গাজীপুর সদর) গাজীপুর জেলার চান্দনা চৌরাস্তায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম ভাস্কর্য।
১৯৭১ সালের ১৯শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপর্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়দেবপুরে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ হয়। প্রতিরোধযুদ্ধে শহীদ হন হুরমত আলী, নিয়ামত আলী, মনু খলিফা, কানু মিয়া প্রমুখ। শহীদদের অবদান এবং আত্মত্যাগকে সমুন্নত রাখতে রাজধানী ঢাকার অদূরে গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা- জয়দেবপুর-এর সংযোগস্থল চৌরাস্তার সড়ক-দ্বীপে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধ ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’। ভাস্কর আবদুর রাজ্জাকের নকশায় ও তাঁর সহকারী হামিদউজ্জামান খানের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির প্রকৌশলীদের সহযোগিতায় কংক্রিট, গ্রে সিমেন্ট, হোয়াইট সিমেন্ট ইত্যাদির সমন্বয়ে ১৯৭৩ সালে ১০০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট এ ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়। ভিত বা বেদিসহ জাগ্রত চৌরঙ্গীর উচ্চতা ৪২ ফুট ২ ইঞ্চি। ২৪ ফুট ৫ ইঞ্চি বেদির ওপর মূল ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১৭ ফুট ৯ ইঞ্চি। ভাস্কর্যের বেদিতে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১১নং সেক্টরের ১০৭ জন এবং ৩নং সেক্টরের ১০০ জন শহীদের নাম খোদাই করা আছে। বাংলাদেশ সেনাবহিনীর এডজুট্যান্ট মেজর জেনারেল আমিন আহমেদ চৌধুরী স্মৃতিসৌধটির নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধান করেন। এক হাতে রাইফেল ও অন্য হাতে গ্রেনেড ছোড়ার দৃপ্ত ভঙ্গিতে নির্মিত এ ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় নির্মিত এটিই প্রথম ভাস্কর্য বলে স্বীকৃত। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড