বীর প্রতীক জহিরুল হক খান
জহিরুল হক খান, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৫০) মুক্তিযুদ্ধকালে প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্স সম্পন্নকারী, একজন বীর সৈনিক ও পরবর্তীতে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত। তাঁর জন্ম ১৯৫০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সুহিলপুর উপজেলায়। তাঁর মাতা হাবিয়া খাতুন এবং পিতা সুলতান আহমদ খান।
৭১ সালে জহিরুল হক খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ১ম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান। প্রশিক্ষণকালে তিনি ফার্স্ট বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সে মনোনীত হন এবং প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশনপ্রাপ্ত হন। এরপর তিনি ৪ নম্বর সেক্টরে যোগ দিয়ে অমলাসিদ সাব-সেক্টরে দায়িত্ব পালন করেন এবং এ সেক্টরের অধীন সিলেটের কানাইঘাট এলাকায় যুদ্ধ করেন। কানাইঘাটে পাকবাহিনীর একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। ঘাঁটিটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা লুবাছড়া চা বাগানে অবস্থান নিলে পাকসেনারা তাঁদের ওপর কামানের গোলাবর্ষণ শুরু করে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ শুরু হয়। জহিরুল হক খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপ চরখাই সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রচণ্ড আক্রমণ করেন। এতে বহু পাকসেনা হতাহত হয়। এ-যুদ্ধে তিনি অসীম সাহসিকতা ও অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ক্যাপ্টেন জহিরুল হক খান ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মাহবুবা আক্তার। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড