জন্তরী গণহত্যা (নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ)
জন্তরী গণহত্যা (নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৭ই মে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক। এ গণহত্যায় জন্তরী গ্রামের বেশ কয়েকজন মানুষ শহীদ হন।
নবীগঞ্জ সদরের উত্তর দিকে স্বল্প দূরত্বে জন্তরী গ্রাম অবস্থিত। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং গরিব কৃষক ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের। ঘটনার দিন পাকিস্তানি সৈন্যদের একটি বড় দল শেরপুর থেকে পায়ে হেঁটে নবীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয়। জন্তরী গ্রামের কাছে পৌঁছলে তাদের একটি অংশ গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করে। হানাদার বাহিনীর আগমন লক্ষ করে গ্রামবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আত্মরক্ষার জন্য দিগ্বিদিক পালাতে থাকে। অনেকেই গ্রামের নির্জন স্থানে আত্মগোপন করে। গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করেই পাকিস্তানি সৈন্যরা প্রাণভয়ে পলায়নরত কয়েকজন নর-নারীকে হত্যা করে। একই সঙ্গে তারা কয়েকটি বাড়িঘরে লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগ করে। গণহত্যায় শহীদ কয়েকজন নর-নারী হলেন— জন্তরী গ্রামের কালী নমঃশূদ্রের বৃদ্ধা শাশুড়ি কামিনী নমঃশূদ্র, কুটি চান দেব, ননী শীল (হালিতলা) এবং ইরফান উল্লা (মিল্লিক)। এ গণহত্যার পর পাকিস্তানি সৈন্যরা নবীগঞ্জের দিকে চলে যায়।
পরবর্তীতে জুন মাসে রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পুনরায় এ গ্রামটি আক্রমণ করে। এ-সময় তারা ব্যাপক লুটপাট এবং মাৎসিনী বৈদ্য নামে একজন মহিলাকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া বেশ কয়েকজন নারী তাদের ধর্ষণের শিকার হন। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড