You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রবাহিনী (ইসলামপুর, জামালপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রবাহিনী (ইসলামপুর, জামালপুর)

ছাত্রবাহিনী (ইসলামপুর, জামালপুর) সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব রাশেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ২৯শে মার্চ বর্তমান ইসলামপুর জে জে কে এম গালর্স হাইস্কুল এন্ড কলেজে গঠিত হয়। ছাত্র পরিষদ হিসেবেও এ বাহিনী পরিচিত ছিল। স্থানীয় ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন-এর নেতা-কর্মীরা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছাত্রলীগের পক্ষে জোড়ালো ভূমিকা রাখেন ইদ্রিস আলী বাহাদুর, আব্দুর রৌফ, আনন্দমোহন কলেজের ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন (নাপিতের চর), খন্দকার আব্দুল কাদের ও নূরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে ছিলেন প্রফেসর ফজলুল হক আকন্দ, খন্দকার আনোয়ার (পলবান্ধা), সৈয়দ হাসানুজ্জামান হেলাল, এ কে এম হাবিবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন (হাড়িয়াবাড়ি), আ. বারী মণ্ডল, কে বি এম আমিনুল ইসলাম, এডভোকেট আখতারুজ্জামান (কাছিমা), সুভাস চন্দ্র দাস ওরফে রতন (পরবর্তীতে যুদ্ধাহত), মোহাম্মদ আলী মাস্টার, ঢেঙ্গারগড়ের মতি (পরবর্তীতে যুদ্ধাহত), মুনছর আলী, আলী নেওয়াজ, লিয়াকত আলী, আজিজুর হক (নাওভাঙ্গা), নিজাম উদ্দিন, হারুনুল হক ফারুকী ওরফে মাসুম, রমিজ আলী, শফিকুল ইসলাম ওরফে আবু, মো. ওয়াজেদ আলী, এ বি এম মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
ছাত্রদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে ট্রেনিং নেয়ার জন্য রিক্রুটিং-এর দায়িত্বে ছিলেন ইদ্রিস আলী বাহাদুর, আব্দুর রৌফ ও খন্দকার আব্দুল কাদের। ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের পরামর্শে খন্দকার আব্দুল কাদের, এলাহী নেওয়াজ, সামছুল হক, ইদ্রিস আলী বাহাদুর ও নবী নেওয়াজ (জলি মিয়া) মহেন্দ্রগঞ্জ ক্যাম্প-ইন-চার্জ ক্যাপ্টেন নিয়োগীর কাছে অস্ত্র আনতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু দুজনের বেশি যাওয়ার অনুমতি না থাকায় সাদা ফ্ল্যাগ হাতে নিয়ে এলাহী নেওয়াজ ও খন্দকার আব্দুল কাদের সেখানে পৌঁছলে ক্যাপ্টেন নিয়োগী জানান যে, যেহেতু বাংলাদেশ সরকার-এর সঙ্গে ভারত সরকারের এ বিষয়ে আলোচনা চলছে, সেহেতু এখনি অস্ত্র দেয়া যাবে না।
মুজাহিদ প্লাটুন কমান্ডার মনোয়ার হোসেন, আশরাফ আলী মাস্টার ও মুক্তার হোসেন ছাত্রবাহিনীতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এ বাহিনীর সদস্যরা পাকসেনাদের গতিপথ রোধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন, যেমন- গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে রাখা, রাস্তা ভাঙ্গা ইত্যাদি। মতিউর রহমানের (মুখশিমলা) নেতৃত্বে মুজাহিদ বাহিনী দ্বারা দামচড়ইবিল-দরিয়াবাদ রাস্তা কেটে এবং গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে ছাত্রবাহিনীর বেশকিছু সদস্য ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে প্রশিক্ষণ নিতে যান। প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে এসে তারা ১১ নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। [ভোলা দেবনাথ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড