You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও অন্যতম প্রাচীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগ এ দেশের সর্ববৃহৎ ও অন্যতম প্রাচীন ছাত্র সংগঠন। ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অডিটরিয়ামে এর প্রতিষ্ঠা। এর প্রধান উদ্যোক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-। তখন এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। ১৯৫৩ সালে নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দিয়ে সবার জন্য এর দ্বার উন্মুক্ত করা হয়। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এটি আওয়ামী লীগ-এর সহযোগী সংগঠন। আওয়ামী লীগ সভাপতি এর সাংগঠনিক প্রধান। ‘শান্তি, শিক্ষা, প্রগতি’ এর মূলমন্ত্র।
ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত ছাত্রনেতা আব্দুল ওয়াসেক (১৯০৬-১৯৬৭)-এর নেতৃত্বে সে-সময় বিভিন্ন জেলা শহরে গড়ে ওঠা মুসলিম ছাত্রদের সংগঠন বা সমিতিসমূহকে ঐক্যবদ্ধ করে কলকাতায় খান বাহাদুর আসাদুজ্জামানকে সভাপতি ও আব্দুল ওয়াসেককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্র সমিতি। ছাত্রদের এ সংগঠন ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারকার্যে অংশগ্রহণ করে। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর আব্দুল ওয়াসেককে সভাপতি ও শামসুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগ। এটি ছিল বঙ্গীয় মুসলিম লীগের সহযোগী ছাত্র সংগঠন। তখনকার দিনে অ-ছাত্র বিশেষ করে ধনাঢ্য বা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত কোনো ব্যক্তির সংগঠনের সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করার রেওয়াজ ছিল। বলা যায়, তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সভাপতি এ সহযোগী ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক নেতা/নেত্রী। নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক (১৮৭৩- ১৯৬২)-এর নেতৃত্বাধীন ‘শ্যামা-হক মন্ত্রিসভা’ নামে পরিচিত তাঁর দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা (১৯৪১-১৯৪৩)-বিরোধী আন্দোলন, বাংলায় পাকিস্তান আন্দোলন ও ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের প্রার্থীদের পক্ষে এবং বিভাগ- পূর্বকালে ৭ই জুলাই অনুষ্ঠিত সিলেট রেফারেন্ডামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা এবং নতুন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা বিতর্কের পটভূমিতে দেশ ভাগের সাড়ে ৫ মাসের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তা ছিল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার (১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন)-ও প্রায় দেড় বছর পূর্বে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবি : হারুন-অর-রশিদ আরবি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র রাজশাহীর নঈমউদ্দিন আহমদ (১৯২৪-১৯৬৭)-কে কনভেনর করে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কমিটি গঠনের মাধ্যমে এর নবযাত্রা শুরু হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ১) শেখ মুজিবুর রহমান (ফরিদপুর), ২) আবদুর রহমান চৌধুরী (বরিশাল), ৩) অলি আহাদ (কুমিল্লা), ৪) আজিজ আহমদ (নোয়াখালী), ৫) আবদুল মতিন (পাবনা), ৬) দবিরুল ইসলাম (দিনাজপুর), ৭) মফিজুর রহমান (রংপুর), ৮) শেখ আবদুল আজিজ (খুলনা), ৯) নওয়াব আলী (ঢাকা), ১০) নূরুল কবির (ঢাকা সিটি), ১১) আবদুল আজিজ (কুষ্টিয়া), ১২) সৈয়দ নূরুল আলম (ময়মনসিংহ) ও ১৩) আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী (চট্টগ্রাম)। ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে আরো যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, (অধ্যক্ষ) কামরুজ্জামান (কুষ্টিয়া), আব্দুল ওয়াদুদ (চাঁদপুর), কাজী গোলাম মাহবুব (বরিশাল), মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমদ (ফরিদপুর), শওকত আলী ওরফে শওকত মিয়া (পুরান ঢাকা) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
নঈমউদ্দিন আহমদ কনভেনর হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ই ছিলেন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তা, যা শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে। দেশ বিভাগের পূর্বে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের মধ্যে সোহরাওয়ার্দী-আবুল হাশিম বনাম খাজা নাজিমুদ্দীন-আকরম খাঁ এ দুটি ধারা বিরাজমান ছিল, যা ‘প্রগতিশলী’ বনাম ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ ধারা হিসেবে তখন পরিচিত ছিল। বঙ্গীয় মুসলিম ছাত্রলীগও অভ্যন্তরীণভাবে দুটি ধারায় বিভক্ত ছিল। প্রথম ধারার নেতৃত্বে ছিলেন নূরুদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (কলকাতা ইসলামীয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক) প্রমুখ, অন্যদিকে দ্বিতীয় ধারার নেতৃত্বে ছিলেন শাহ আজিজুর রহমান ও শামসুল হুদা চৌধুরী। ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী-আবুল হাশিমের অনুসারী প্রগতিশীল ধারার ছাত্রনেতৃবৃন্দই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। অপরদিকে শামসুল হুদা চৌধুরীকে সভাপতি ও শাহ আজিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে নাজিমুদ্দীন- নূরুল আমীন সরকার সমর্থক নিখিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠিত হয়।
দেশ বিভাগের পূর্বে চল্লিশের দশকের মধ্যবর্তী সময় থেকে পূর্ব বাংলার প্রগতিশীল মুসলিম লীগ/ছাত্রলীগের কর্মী- সমর্থকগণ টাঙ্গাইলের শামসুল হক (পরবর্তীকালে আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক)-এর নেতৃত্বে পুরান ঢাকার শওকত আলীর ১৫০ নম্বর মোগলটুলী হাউস (‘পার্টি হাউস’ নামে খ্যাত)-কে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়েছিল। এখানেই ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন অফিস। বঙ্গবন্ধুর সভাপতিত্বে ১৯৪৯ সালে ঢাকার তাজমহল সিনেমা হলে ছাত্রলীগের প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ কাউন্সিল অধিবেশনে দবিরুল ইসলামকে সভাপতি ও খালেক নেওয়াজ খান (ময়মনসিংহ, বর্তমানে কিশোরগঞ্জ)-কে সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
প্রতিষ্ঠা থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের যাঁরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন ছিলেন, তাঁরা হলেন- নঈমুদ্দিন আহমদ, আহ্বায়ক (১৯৪৮); দবিরুল ইসলাম, সভাপতি ও খালেক নেওয়াজ খান, সাধারণ সম্পাদক (১৯৪৯-৫৩); কামরুজ্জামান, সভাপতি ও এম আবদুল ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক (১৯৫৩-৫৪); আবদুল মমিন তালুকদার, সভাপতি ও আবদুল ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক (১৯৫৪-৫৫); আবদুল মমিন তালুকদার, সভাপতি ও আবদুল আওয়াল, সাধারণ সম্পাদক (১৯৫৫-৫৭); রফিকুল্লা চৌধুরী, সভাপতি (১৯৫৭-৬০) ও কাজী আজহারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক (১৯৫৭-৫৮) এবং শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক (১৯৫৭-৬০); শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সভাপতি ও শেখ ফজলুল হক মনি, সাধারণ সম্পাদক (১৯৬০-৬৩); কে এম ওবায়দুর রহমান, সভাপতি ও সিরাজুল আলম খান, সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৩-৬৫); মাজহারুল হক বাকী, সভাপতি ও আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৫-৬৭); ফেরদৌস আহমদ কোরেশী, সভাপতি ও আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৭- ৬৮); আব্দুর রউফ, সভাপতি ও খালেদ মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৮-৬৯); তোফায়েল আহমদ, সভাপতি ও আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৯- ৭০) এবং নূরে আলম সিদ্দিকী, সভাপতি ও শাজাহান সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক (১৯৭০-৭২)।
দেশ বিভাগ ও ভাষা-আন্দোলন-এর পটভূমিতে প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যদের সঙ্গে নিয়ে ভাষা-আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছাত্রলীগের এসব নেতা-কর্মীর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কাজী গোলাম মাহাবুব, অলি আহাদ, আব্দুল ওয়াদুদ, খালেক নেওয়াজ খান, তাজউদ্দীন আহমদ, দবিরুল ইসলাম, শামসুল হক চৌধুরী, নঈমউদ্দিন আহমেদ (১৯৪৯ সালে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত), জিলুর রহমান, মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমেদ, শওকত আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এঁদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভাষা-আন্দোলনের প্রথম কারাবন্দিদের মধ্যে অন্যতম ( ১১ই মার্চ ১৯৪৮)। ৪৮ ও ৫২-র ভাষা-আন্দোলনকালে ছাত্রলীগের আরো যাঁরা গ্রেপ্তার হন, তাঁদের মধ্যে আব্দুল ওয়াদুদ ও শওকত আলীর নাম উল্লেখযোগ্য। ১৯৪৮ সালের ২৪শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জিন্নাহর ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ ঘোষণার যাঁরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেছিলেন, ছাত্রলীগের কনভেনর নঈমউদ্দিন আহমদ ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
ভাষা-আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব শুরুর প্রাক্কালে ৩০শে জানুয়ারি ১৯৫২ ঢাকা জেলা বার লাইব্রেরিতে আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় গঠিত ২৮ সদস্যবিশিষ্ট সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে ছাত্রলীগ থেকে ৪ জন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। তাঁরা হলেন- শামসুল হক চৌধুরী (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ), খালেক নেওয়াজ খান (সাধারণ সম্পাদক, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ), কাজী গোলাম মাহবুব ও সৈয়দ নূরুল আলম। ছাত্রলীগের কাজী গোলাম মাহাবুব সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ভাষা-আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্বে (১৯৫২) পূর্ব থেকে বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (তখন তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম-সম্পাদক) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সরকারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ২১শে ফেব্রুয়ারি রাজপথে নেমে আসতে ছাত্রলীগসহ আন্দোলনের অন্য নেতা-কর্মীদের কীভাবে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তার বিশদ বিবরণ বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে (পৃ. ৪০-৪১) রয়েছে। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঐ সময় ফরিদপুর কারাগারে নেয়া হলে, সহবন্দি মহিউদ্দিন আহমদ (১৯২৫-১৯৯৭)-কে সঙ্গে নিয়ে তিনি একনাগাড়ে ১১ দিন আমরণ অনশন পালন করেন। ভাষা-আন্দোলন পর্বে ১৯৪৯ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি আদায়ের আন্দোলন ও ধর্মঘটেও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এ অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ছাত্রলীগের দবিরুল ইসলাম (নঈমউদ্দিন আহমদ সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক), আব্দুল হামিদ চৌধুরী ও অলি আহাদকে ৪ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুর রহমান চৌধুরী (তখন সহ-সভাপতি, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্র সংসদ)-কে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (তখন আইনের ছাত্র ও আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম-সম্পাদক) ও নঈমউদ্দিন আহমদ (আহ্বায়ক, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ)-কে ১৫ (পনের) টাকা জরিমানা, অনাদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের শাস্তি দেয়া হয়।
৫৪ সালে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগবিরোধী জোট যুক্তফ্রন্ট (আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামী ইসলামী ও গণতন্ত্রী দল)-এর প্রার্থীদের পক্ষে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ২১-দফা নির্বাচনী কর্মসূচি নিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েন। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয়ে (২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি, মুসলিম লীগ ৯টি, খিলাফতে রাব্বানী ১টি, স্বতন্ত্র ৪টি) ছাত্রলীগ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, এ নির্বাচনে মুসলিম লীগ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমীন যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা খালেদ নেওয়াজ খানের নিকট শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করেন।
১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে প্রথমে জেনারেল ইস্কান্দার মীর্জা এবং ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে তাকে সরিয়ে জেনারেল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে এক নাগাড়ে একদশক দেশ শাসনের নামে স্টিমরোলার চালায়। তথাকথিত ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ (১৯৫৯)-এর নামে সেনা-আমলাতান্ত্রিক কেন্দ্রীভূত শাসন-শোষণ ও বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। ১৯৬২ সালের ৩০শে জানুয়ারি বাঙালির জনপ্রিয় ও বর্ষীয়ান জননেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে আইয়ুব সরকার গ্রেপ্তার করলে, ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয় আইয়ুববিরোধী আন্দোলন। রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয় আইয়ুব সরকারের শিক্ষা-সংকোচন, ব্যয়বহুল, বাংলা ভাষা বিদ্বেষী, প্রতিক্রিয়াশীল শরিফ শিক্ষা কমিশন (১৯৬২) ও হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টবিরোধী ছাত্র সমাজের নতুন আন্দোলন। এ আন্দোলনে ছাত্রলীগের পাশাপাশি ন্যাপ- কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (প্রতিষ্ঠা ১৯৫২) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আত্মগোপনে থাকা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমরেড মণি সিংহ ও কমরেড খোকা রায়ের সঙ্গে এক গোপন বৈঠকে বাঙালির জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে আইয়ুববিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করার ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছেন। তখন থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতোত্তর বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় পর্যন্ত ন্যাপ- কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সখ্যের ধারা অব্যাহত থাকে।
আইয়ুব শাসন আমলে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হলে, ১৯৬৪ সালে ছাত্রলীগ ৭ দিন ব্যাপী ‘বাংলা ভাষা প্রচলন সপ্তাহ’ পালন করে। একটি পোস্টার ছিল এরূপ: ‘মোদের গরব মোদের ভাষা, আ-মরি বাংলা ভাষা বাংলায় পড়ুন → বাংলায় লিখুন বাংলায় কথা বলুন- ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সর্বত্র বাংলা ভাষা কায়েম করুন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর ৬৬-র ফেব্রুয়ারি মাসে বাঙালির জাতীয় মুক্তি তথা স্বাধীনতার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘আমাদের বাঁচার দাবি’ ৬-দফা খ্যাত তাঁর ঐতিহাসিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে কেউ-কেউ ৬-দফা প্রশ্নে দ্বিধাগ্রস্ত, সন্দিহান এমনকি ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করলেও, ছাত্রলীগ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ৬-দফা’র প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করে এর পক্ষে জনমত গঠনে দেশব্যাপী ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদিকে ৬- দফা কর্মসূচিকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আখ্যায়িত করে আইয়ুব খান এর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ‘অস্ত্রের ভাষা’ প্রয়োগের হুমকি দেয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর এ কর্মসূচি ঘোষণার পর মাত্র ৩ মাস দেশব্যাপী প্রচারের সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর ৮ই মে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দীর্ঘদিনের জন্য আইয়ুব সরকার কারাবন্দি করে রাখে। এমতাবস্থায়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিটিং-মিছিল, পোস্টার, দেয়াল লিখন, প্রচারপত্র ইত্যাদির মাধ্যমে বাঙালিদের নিকট তাদের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন- শোষণ, আঞ্চলিক বৈষম্য ও জাতিনিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে এ থেকে ‘মুক্তির সনদ’ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ৬-দফা কর্মসূচি বাঙালিদের ঘরে-ঘরে পৌঁছে দেন। ১৯৬৮ সালে বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে আইয়ুব সরকার, ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য’ শিরোনামে ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করে, যা সে-সময় ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ নামে পরিচিত ছিল। আইয়ুব সরকারের দমন-পীড়ন এবং ৬-দফা সমর্থক আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করার পরও ৬-দফা আন্দোলনকে সরকারের পক্ষে স্তিমিত করা সম্ভব হয়নি। একদিকে যখন ঢাকার কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে বঙ্গবন্ধু ও আগরতলা মামলার অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে বিচার চলছিল, তখন অপরদিকে ডাকসু-র তৎকালীন সহ-সভাপতি (বর্তমানে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা) তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন ও মতিয়া উভয় গ্রুপ) ও সরকারি ছাত্র ফেডারেশন (দোলন- নাজিম কামরান গ্রুপ) ১১-দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে আইয়ুববিরোধী মঞ্চ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে বাংলার ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরিণতিতে সংঘটিত হয় ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। আইয়ুব সরকার নিঃশর্তভাবে আগরতলা মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুসহ সকল অভিযুক্তকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এর প্রায় পরপর আইয়ুব সরকারের পতন ঘটে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। তার অধীনে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অভূতপূর্ব বিজয়ে ছাত্রলীগ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনোত্তর মেজরিটি পার্টির নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তা নতুন ষড়যন্তের আশ্রয় গ্রহণ করে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিমান ও জাহাজে করে পূর্ব বাংলায় সৈন্য ও অস্ত্র আনতে থাকে। ৩রা মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দুদিন পূর্বে ১লা মার্চ স্থগিত ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ২রা মার্চ থেকে সমগ্র পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন-এর কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি যাতে অক্ষরে-অক্ষরে পালিত হয়, সে ব্যাপারে ছাত্রলীগ সম্পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করে। ২রা মার্চ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সম্মুখে হাজারো ছাত্র-জনতার সমাবেশে সবার উদ্দেশে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরেন। বস্তুত ৭১-এর মার্চ মাস ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাঙালি জাতির উত্থানকাল। ছাত্রলীগ ও ডাকসু-র নেতৃত্বে গঠিত হয় “স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’। ৩রা মার্চ পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের আয়োজনে লক্ষ জনতার সমাবেশে শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।
৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)-এ অনুষ্ঠিত জনতার এক মহাসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ঘোষণা দিয়ে বাঙালিদের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আসন্ন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণে ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা’র আহ্বানসহ এক দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দান করেন, যা ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ- নামে খ্যাত। ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা ডামি রাইফেল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাঙ্গণসমূহে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে থাকেন। রাস্তায় স্লোগান ওঠে, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। ২৫শে মার্চ কালরাতে ইয়াহিয়ার জান্তা সরকারের নির্দেশে অপারেশন সার্চলাইট নামে নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়লে মধ্যরাতের সামান্য পর অর্থাৎ ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালির প্রতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি ও তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত বাংলাদেশ সরকার-এর অধীনে পরিচালিত এ মুক্তিযুদ্ধ একটি জনযুদ্ধ-এর রূপ নেয়। বাঙালি পেশাদার সৈনিক ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের বাইরে ছাত্রলীগের ১০ হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে গঠিত হয় বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স বা মুজিব বাহিনী – নামে একটি বিশেষ বাহিনী। ছাত্রলীগের নারী সদস্যরাও মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুজিব বাহিনীর সদস্যরা শত্রুর বিরুদ্ধে সরাসরি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করা ছাড়াও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অভ্যর্থনা শিবির ও ইয়ুথ ক্যাম্প পরিচালনা, মুক্তিযোদ্ধাদের রিক্রুটমেন্ট ও মোটিভেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের শুরুতেই প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জনে অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করে। তাই বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের ভূমিকা স্মরণ করতে গিয়ে এ সংগঠনকে ‘এদেশের গণসংগ্রামের জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা (১৯৪৯)-র পূর্বে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা, যা শুরুর দিকে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে দলের কমিটি গঠনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল অনেক স্থানে পাওয়া যেত না। সে অবস্থায় ছাত্রলীগ কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে কোথাও-কোথাও আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হতো। সে প্রসঙ্গ ও ভাষা- আন্দোলনের প্রথম পর্বেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন, এ বিষয়ে ১৯৪৯ সালে বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ যে নেতৃত্ব দিয়েছে, পূর্ব বাংলার লোক কোনোদিন তা ভুলতে পারবে না। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার আপনারা করেছেন এদেশের মানুষ চিরজীবন তা ভুলতে পারবে না। আপনারাই এদেশে বিরোধী দল সৃষ্টি করেছেন।’
বাঙালির জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় অভ্যন্তরীণভাবে ছাত্রলীগের মধ্যে নেতৃত্ব ও অন্যান্য ইস্যুতে মতদ্বৈধতা দেখা দেয়। ১৯৭২ সালে এর একটি অংশ কর্তৃক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তা বিচ্ছেদে রূপ নেয়। এতদ্সত্ত্বেও ছাত্রলীগ স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ষড়যন্ত্র ও উগ্র বামপন্থীদের তৎপরতা মোকাবেলা করে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ও আদর্শ ধারণ এবং ৭৫-এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর দীর্ঘ সেনাশাসনের কবল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। [হারুন-অর-রশিদ]
তথ্যসূত্রঃ শেখ মুজিবুর রহমান, অসমাপ্ত আত্মজীবনী, ঢাকা, ইউপিএল ২০১২; হারুন-অর-রশিদ, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পুনর্পাঠ, ঢাকা, ইউপিএল ২০১৮; হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ : রাজনীতি সরকার ও শাসনতান্ত্রিক উন্নয়ন ১৭৫৭-২০১৮, ঢাকা, অন্যপ্রকাশ ২০১৮; হারুন- অর-রশিদ, মূলধারার রাজনীতি: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ১৯৪৯-২০১৬, বাংলা একাডেমি ২০১৬; অলি আহাদ, জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫, ঢাকা ২০০৪; Harun-or-Rashid, The Foreshadowing of Bangladesh: Bengal Muslim League and Muslim Politics, 1906-1947, Dhaka, UPL 2018

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!