You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে ছাগলনাইয়া উপজেলা (ফেনী)

ছাগলনাইয়া উপজেলা (ফেনী) ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ফেনী সদরের পূর্বে পাঠান নগর ইউনিয়ন থেকে এর যাত্রা শুরু। পাঠান নগর ইউনিয়নের পরে থানা সদর ইউনিয়ন, উত্তরে মহামায়া ইউনিয়ন, মহামায়া ইউনিয়ন থেকে লম্বালম্বী সর্বদক্ষিণে ১০ নং ঘোপাল ইউনিয়ন এবং পূর্বে ৯নং শুভপুর ইউনিয়ন নিয়ে সমগ্র উপজেলাটি মুহুরী নদীর তীরে অবস্থিত। ইউনিয়নগুলোর অবস্থান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী বলে পাকহানাদার বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী উভয়ের জন্যই এ অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পাকবাহিনী এ অঞ্চলে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছিল। ছাগলনাইয়া উপজেলার মধ্যে ১০নং ঘোপাল, ৯নং শুভপুর এবং সদর ইউনিয়ন ছিল যুদ্ধক্ষেত্র। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ-এ উজ্জীবীত হয়ে ছাগলনাইয়াবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি নেয় আওয়ামী লীগ- ও ছাত্রলীগ-এর নেতৃত্বে এখানে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের কার্যক্রম শুরু হয়।
ছাগলনাইয়া উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে যাঁরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন, তাঁরা হলেন- সলিমুল্লাহ চৌধুরী (থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি), এডভোকেট আবুল কাশেম (থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক), কাদের মজুমদার, ওহিদের রহমান, গোফরান মিয়া, মাজাহার উদ্দিন, মো. ইউছুপ চৌধুরী, আজিজ আহম্মদ চৌধুরী, আবুল হাসেম পাটোয়ারী, কাজী বারিক, মো. ইবরাহীম, মো. সামছুল আলম, আলি আহম্মদ, মো. মাহমুদুল্যাহ, মনির আহম্মদ মজুমদার, কাজী নুরুল হুদা, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম ভূঞা, কামাল উদ্দিন মজুমদার, হাফেজ আহাম্মদ বিএ, প্রফেসর মাহমুদুল্যাহ প্রমুখ। ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- নূরনবী চৌধুরী (চট্টগ্রাম বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক), ফয়েজ আহম্মদ, মীর আবদুল হান্নান, এয়ার আহম্মদ সরকার,
সিরাজুদৌল্লাহ মজুমদার, আবু আহম্মদ, মজিবল হক, আনিছুল হক, আবদুল লতিফ, বেলায়েত হোসেন, নুরুল হুদা মজুমদার, জগনাথ মিত্র, সতীশ চন্দ্ৰ, এয়ার আহম্মদ ভূঞা প্রমুখ। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন- ডা. জালাল আহম্মদ ভূঞা, মাস্টার আবুল কাশেম খদ্দর, ডা. অলিনেওয়াজ, শফিকুর রহমান, এডভোকেট শহিদুল্যাহ, আবুল হাসেম, আবদুল কুদ্দুছ, মাস্টার কালি বাবু প্রমুখ। আবদুল হক (প্রধান শিক্ষক, মুহুরীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়)-কে আহ্বায়ক এবং খোরশেদ আলমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ঘোপালে সংগাম কমিটি গঠিত হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ডা. শেখ আবদুর রউফ মাস্টার ( হোমিও চিকিৎসক), নশা আহম্মেদ (নশুমিয়া), আবু তাহের(স্বাধীনতা-পরবর্তী পঞ্চায়েত মেম্বার), আহম্মদ হোসেন চৌধুরী (স্বাধীনতা-পরবর্তী পঞ্চায়েত মেম্বার), কানু মিয়া (ইউপি চেয়ারম্যান, গণহত্যায় শহীদ), এডভোকেট অহিদের রহমান চৌধুরী ইউপি চেয়ারম্যান), সুবেদার আলি নেওয়াজ (পরবর্তীতে পঞ্চায়েত চেয়ারম্যান), হোসেন আহম্মদ খন্দকার (পরবর্তীতে পঞ্চায়েত মেম্বার), ডা. কামাল উদ্দিন, রমিজ মিয়া, হোসেন আহম্মেদ, তাহের আহম্মেদ, বুলু মিয়া প্রমুখ (এঁরা সকলে উপজেলায় সত্তরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন)
স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করার জন্য ঘোপালে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন খোরশেদ আলম (কলেজের ছাত্র) এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবল হক ভূঞা (কলেজের ছাত্র)। কমিটির উল্লেখযোগ্য সদস্য ছিলেন- আবদুল হালিম মানিক (১০ম শ্রেণির ছাত্র), মোস্তাফিজুর রহমান বাদল (৯ম শ্রেণির ছাত্র), আবুল কাশেম (১০ম শ্রেণির ছাত্র), শেখ জয়নাল আবেদিন (১০ম শ্রেণির ছাত্র), আবদুল ওয়াদুত (১০ম শ্রেণির ছাত্র), সেলিম আক্তার খান (কলেজের ছাত্র), জহির উদ্দিন খন্দকার (কলেজের ছাত্র), ইলিয়াছ খন্দকার (কলেজের ছাত্র), কামাল উদ্দিন রহমানী (কলেজের ছাত্র), আলি হোসেন (বিএসসি), জামাল উদ্দিন (কলেজের ছাত্র), এ টি এম মুনসুর আহম্মেদ (কলেজের ছাত্র), গাজি গোফরান (কলেজের ছাত্র) প্রমুখ। পরবর্তীতে এঁরা সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন।
এখানকার জাতীয় পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ মজুমদার এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য খয়ের উদ্দিন আহমেদ এলাকার ছাত্র-যুবকদের সংগঠিত করেন। এক পর্যায়ে ওবায়দুল্লাহ মজুমদার এমএনএ প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে যান এবং কয়েকদিন সেখানে অবস্থানের পর দেশে এসে অজ্ঞাত কারণে পাকবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ডা. এ এম মালেক-এর নেতৃত্বে পাকিস্তানের তাবেদার মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তিনি তাতে খাদ্যমন্ত্রী হয়ে পাকবাহিনীর দোসরে পরিণত হন।
করৈয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র, ছাত্রলীগ নেতা আ জ ম জিয়াউল হক সেলিমের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় যুদ্ধের প্রস্তুতিস্বরূপ কামার কারখানা থেকে মিস্ত্রি দিয়ে তিন শতাধিক দেশীয় অস্ত্র (টেটা, বল্লম, কোচ, ঢাল, তলোয়ার) তৈরি করা হয়। ৭ই মার্চের পর নোয়াখালী জেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খন্দকার মোজাম্মেলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা পাঠান নগর ইউনিয়নের সাধারণ জনতার উপস্থিতিতে পাকিস্তান বাজারের নাম পরিবর্তন করে বাংলাবাজার নামকরণ করেন। ৮ই মার্চ থেকে ঘোপালের লাঙ্গলমোড়া ভূঞা পুকুর মাঠে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সামসুল আলম ভূঞা (জয়দেবপুর অস্ত্র তৈরির কারখানায় চাকরি করতেন)। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সকল সদস্যসহ ৮০ জন এতে অংশ নেন। এ প্রশিক্ষণে সৈনিকদের মতো পিটি, বন্দুক চালানোসহ বল্লম, ঢাল-তলোয়ার, তীর-ধনুক ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধের কৌশল শেখানো হয়। ২৫শে মার্চ পর্যন্ত এ প্রশিক্ষণ চলে। পরবর্তীতে এরা সবাই প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে গমন করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এঁদের নাম ছিল ভূঞা বাহিনী। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে এ বাহিনী প্রথমে ঘোপালে এসে পাকবাহিনী এবং রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। পরে ভূঞা বাহিনীর সদস্যরা ইদ্রিছ কমান্ডারের নেতৃত্বে বিভিন্ন গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। এ উপজেলার শুভপুর ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের হরিনা, পালাটন, বগা পাহাড়, লোহার বন ও আগরতলা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
এ উপজেলার মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন ইদ্রিছ (গ্রুপ কমান্ডার, ঘোপাল ইউনিয়ন), আনোয়ার হোসেন (গ্রুপ কমান্ডার, ঘোপাল ইউনিয়ন), আবদুল হক (আঞ্চলিক কমান্ডার, শুভপুর ইউনিয়ন), আবুল হোসেন (গ্রুপ কমান্ডার, রাধানগর ইউনিয়ন), আমির হোসেন (গ্রুপ কমান্ডার, রাধানগর ইউনিয়ন), নায়েক সুবেদার জালাল উদ্দিন (গ্রুপ কমান্ডার, শুভপুর ইউনিয়ন), মিজানউদ্দিন (গ্রুপ কমান্ডার, রাধানগর ইউনিয়ন), ছালে আহম্মদ (গ্রুপ কমান্ডার, রাধানগর ইউনিয়ন), সিরাজউদ্দৌল্যাহ মজুমদার (কমান্ডার, ছাগলনাইয়া সদর), মনির আহম্মদ (কমান্ডার, ছাগলনাইয়া সদর), আবদুল হাই (ছাগলনাইয়া থানা মুজিব বাহিনী কমান্ডার), রাখাল চন্দ্র বণিক (গ্রুপ কমান্ডার, পাঠান নগর ইউনিয়ন), খন্দকার আজিজউল্যা (গ্রুপ কমান্ডার, পাঠান নগর ইউনিয়ন), সামছুল হক মজুমদার (গ্রুপ কমান্ডার, পাঠান নগর ইউনিয়ন)।
মে মাসের প্রথম দিকে মেজর জিয়া, মেজর রফিক, ক্যাপ্টেন সুবেদ আলি ভূঞা এবং জেসিও সুবেদার মেজর জালাল উদ্দিন-এর নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য মুহুরী ব্রিজ এবং দুমঘাট রেলওয়ে ব্রিজ ভেঙ্গে ফেলেন। পাকবাহিনী যাতে এ অঞ্চলে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য পাঠান নগর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাপ্টেন ঘোষের নেতৃত্বে ঢাকা-চট্টগ্রামের প্রবেশপথের রেজুমিয়া ব্রিজ ভেঙ্গে ফেলে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
১২ই মে পাকবাহিনী ছাগলনাইয়া উপজেলায় অনুপ্রবেশ করে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলে। মুহুরী নদীর ওপর রেলওয়ে ব্রিজের উভয় পাশে ক্যাম্প স্থাপন করে এর পাদদেশে বাংকার করে ৮০০ জনের অধিক পাকসেনা অবস্থান নেয়। ফেনী নদীর ওপর ধুমঘাট রেলওয়ে ব্রিজের উভয় পাশে তারা ক্যাম্প স্থাপন করে। এখানেও বাংকার করে ৮০০ জনের অধিক পাকসেনা অবস্থান নেয়। ১২ই মে মুহুরীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে স্টেশনে এবং ১৩ই মে সমিতি বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে সড়কের কাছে ইসলামিয়া মাদ্রাসায় পাকবাহিনী এবং রাজাকাররা অবস্থান নেয়। এছাড়া তারা লাঙ্গলমোড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জেবল হোসেনের বাড়ি এবং নিজকুনজরা সাতানী পাড়ার সিডল মাঠে অবস্থান নিয়ে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নারীনির্যাতনসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে। পাকসেনারা ছাগলনাইয়া থানাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে অনেকগুলো ক্যাম্প স্থাপন করে। সেগুলো হলো- ধুমঘাট রেলওয়ে ব্রিজ, নিজকুনজরা আলিম মাদ্রাসা, জঙ্গল মিয়া, শান্তির হাট, হাজারী পুকুর, করৈয়া উচ্চ বিদ্যালয়, করৈয়া ব্রিজের পাদদেশ, দরগার বাজার, বল্লভপুর স্কুল, চম্পকনগর, মধুগ্রাম, মালিপুর ব্রিজ, চানপুর ব্রিজ, পাঠান নগর ব্রিজ, রেজুমিয়া ব্রিজ, এতিমখানা ক্যাম্প ইত্যাদি। ছাগলনাইয়া উপজেলার মুসলিম লীগ – জামায়াতে ইসলামী ও <নেজামে ইসলামী-র নেতা-কর্মীরা পাকবাহিনীর সহযোগী হিসেবে তৎপর ছিল। তাদের উদ্যোগে বিভিন্ন ইউনিয়নে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। তাহের ভূঞাকে চেয়ারম্যান এবং মাওলানা মোকসেদ আহম্মদ (দৌলতপুর)-কে কো- চেয়ারম্যান করে ঘোপালে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলো- সুলতান আহম্মেদ (দৌলতপুর), সুলতান আহম্মদ (ছয়ঘরিয়া), বাদশা মেম্বার, মজবল হক মেম্বার (পরবর্তীতে রাজাকার কমান্ডার), মো. আবদুল মুন্সি (দৌলতপুর), সুলতান আহম্মদ চৌধুরী (দুর্গাপুর, ফেনী জেলা শান্তি কমিটির সহ-সভাপতি), তজবল হক মেম্বার (তজু মেম্বার), নুরুল ইসলাম (পরবর্তীতে রাজাকার), আবুল বশর (পরবর্তীতে রাজাকার), আক্তার সওদাগর, কেশু মিয়া (পরবর্তীতে রাজাকার), বতু (পরবর্তীতে রাজাকার) প্রমুখ। রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ছিল মজবল হক মেম্বার এবং সদস্য ছিল- নুরুল ইসলাম (লাঙ্গলমোড়া), আবদুর রশিদ (লাঙ্গলমোড়া), আক্তার সওদাগর (লাঙ্গলমোড়া), আবুল বশর (ছয়ঘরিয়া পাড়া), বতু (দৌলতপুর), কেশু (দৌলতপুর) ও ডা. শহিদুল ইসলাম (পিতা ডা. তাজুল ইসলাম, ফেনী জেলা রাজাকার বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ছিল। স্বাধীনতার পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচারাধীন অবস্থায় জেলে ছিল। জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনকালে মুক্তি পায়)।
পাঠান নগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার ক্যাম্পে রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিল— আবদুল হক, কালা মিয়া, অলি আহম্মদ, রহিমুল্লাহ, ডা. মোহা. ইদ্রিছ, আলি আহম্মদ, আবদুল হক, সাদেক হোসেন, ডা. মো. ইছাক, লতিমুল্যাহ মাস্টার প্রমুখ। শুভপুর ইউনিয়নের রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিল— মোহাম্মদ কাশেম, সাহাদাত উল্যাহ, আবদুল জব্বার চৌধুরী, মো. ইসমাইল, ছুট্টি মিয়া চৌধুরী, সুলতান আহম্মদ, মো. শহিদুল্লাহ চৌধুরী, আবদুল মজিদ, (পিতা ছেরাজল হক), মো. ইউছুপ (পিতা শেখ আহম্মদ), আক্তার উদ্দিন (পিতা শেখ আহম্মদ), আক্তার উদ্দিন (পিতা হাফিজ বাকী), খোরশেদ আহম্মদ (পিতা আবদুল হক), সোলায়মান, বশির মেম্বার (কমান্ডার), হাফিজ আহম্মদ (পিতা ফকির আহম্মদ) প্রমুখ। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল- আবদুল জলিল পাটোয়ারী এবং কো-চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মদ। কমিটির অন্যান্য সদস্য ছিল- হাফিজউদ্দিন, আবদুল মজিদ, মোহাম্মদ ইউছুপ, আক্তার উদ্দিন ও খোরশেদ আহম্মদ। এরা পরবর্তীতে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়।
পাকসেনারা স্থানীয় রাজাকার কমান্ডার মজবল হক মেম্বারের নেতৃত্বে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি একদিন নিজকুঞ্জরা ও আলোকদিয়া গ্রাম ঘিরে ফেলে ঐ দুই গ্রামের শতাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করে। এটি নিজকুঞ্জরা- আলোকদিয়া গণহত্যা নামে পরিচিত। পরদিন পাকসেনারা ঘরে-ঘরে ঢুকে লুটতরাজ ও নারীনির্যাতন চালায়। এরপর তারা বহু ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। শুভপুর ব্রিজ ক্যাম্পের পাকসেনারা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এসে লোকজন না পেয়ে বাড়িঘরের গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি লুট করে নিয়ে যায়। তারা জেলেপাড়াসহ সমগ্র গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। এতে দুশর মতো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দক্ষিণ বল্লভপুরে – হানাদাররা গণহত্যা চালায়।
জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সকাল ১০টার দিকে রাজাকার নুরুল ইসলামের সহযোগিতায় পাকবাহিনীর ১০ সদস্যের একটি দল শুভপুর ব্রিজ থেকে রাধানগর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ধুমপাড়ায় প্রবেশ করে লুটতরাজ, লোকজনকে মারপিট ও নারীনির্যাতন করে। বশির নামে এক যুবকের পিতাকে পাকসেনারা লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করার প্রস্তুতি নিলে বশির রাইফেলটি কেড়ে নেয়। এরপর নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গ্রামবাসীরা পাকসেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে তারা গুলি করতে-করতে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। প্রতিশোধ নিতে পরদিন শতাধিক পাকসেনা লক্ষীপুর গ্রাম ঘিরে ফেলে এবং লোকজন না পেয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। শান্তি কমিটির প্রধান আবু তাহের ভূঞার নেতৃত্বে ২৮শে জুন পাকবাহিনী লাঙ্গলমোড়া গ্রামে হানা দিয়ে ৮ জনকে সাতানীপাড়া সিডর ক্যাম্পে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে পার্শ্ববর্তী ফেনী নদীর সংযোগ খালে গুলি করে হত্যা করে, যা লাঙ্গলমোড়া গণহত্যা হিসেবে পরিচিত পাকসেনারা এ গ্রামের বহু ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজাকার মোকশেদ, মৌ. নুরুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম ও রুহুল আমিন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদ বাচ্চুকে তার নিজ বাড়ি থেকে ধরে মুহুরী নদীর পাশে নিয়ে যায়। এরপর রাজাকাররা তার হাত-পা বেঁধে প্রথমে হাত-পায়ের রগ কাটে এবং পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়।
পাকবাহিনী বহু লোককে হত্যা করে ধুমঘাট রেলস্টেশন সংলগ্ন নাপিত বাড়ির বড় পুকুরে ফেলে দেয়। স্বাধীনতার পর ঐ পুকুরে শতশত মৃতদেহের কঙ্কাল পাওয়া যায়। এটি ধুমঘাট নাপিত বাড়ি বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত।
১১ই মে শুভপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ মজুমদার এমএনএ এবং খয়ের উদ্দিন আহমেদ এমপিএ। শুভপুর ব্রিজ যুদ্ধ-এ দুই কোম্পানির বেশি পাকসেনা নিহত হয়। ৩১শে আগস্ট রাতে ৮নং রাধানগর ইউনিয়নের গ্রুপ কমান্ডার আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা নিজ এলাকায় আগমন করে। রাজাকার ও পাকিস্তানি মিলিশিয়ারা জিনারহাট বাজার হয়ে করৈয়া যাবে বলে তাঁরা খবর পান। দ্রুত তাঁরা জিনার হাট বাজার সংলগ্ন রাস্তায় এম্বুশ করেন। এক পর্যায় উভয়পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গুলি বিনিময় হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তা চলে। এতে শত্রুপক্ষের বহু হতাহত হয়। জিনারহাট যুদ্ধ-এ শত্রুপক্ষের অনেকে হতাহত হয়। এ যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাত ১২টার দিকে
আবুল হোসেন ও আনিছুল হকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা রেজুমিয়া রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করেন। ৪ জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। বাকিরা পালিয়ে যায়। রেজুমিয়া রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন-এ মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর গোলা-বারুদ ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেন। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সংঘটিত হয় করৈয়া উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাম্প যুদ্ধ। এতে পাকিস্তানি মিলিশিয়া ও রাজাকার বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য হতাহত হয়। অপরপক্ষে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কমান্ডার ইদ্রিছের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মুহুরীগঞ্জ বাজারস্থ মাওলানা মোকছেদ আহম্মদের ঔষধের দোকানে শান্তি কমিটির (রাজাকার বাহিনী গঠন সংক্রান্ত) বৈঠকে অপারেশন চালান। এ অপারেশনে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আবু তাহের ভূঞা নিহত হয়। এটি মুহুরীগঞ্জ বাজার অপারেশন হিসেবে পরিচিত। আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধারা শুভপুর ইউনিয়নের ওলিনগরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পাকবাহিনীর গোলা-বারুদ ও রসদ বহনকারী ৩০টি গাড়ির বহরে আক্রমণ চালান। পাকসেনারাও পাল্টা আক্রমণ করে। ৩ দিনব্যাপী এ-যুদ্ধে প্রচুর পাকসেনা হতাহত হয় এবং তারা গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায়। পাকবাহিনীর গোলা-বারুদ ও রসদ মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। এটি ওলিনগর যুদ্ধ – নামে পরিচিত। ১৩ই আগস্ট রাতে মুক্তিযোদ্ধারা একটি বাঁশের মাথায় স্বাধীন বাংলার পতাকা বেঁধে পাঠাননগর শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল হকের বাড়ির দরজার সামনে মাঠে উড়িয়ে দেন এবং বাঁশের সঙ্গে তার বেঁধে ঐ মাঠের চারপাশে মাইন পুঁতে রাখেন। খবর পেয়ে পাকবাহিনী এসে মাইন সরিয়ে বাঁশটি উপড়ে ফেলতে গেলে একজন পাকসেনার একটি পা ও একটি হাত বিস্ফোরণে উড়ে যায়। প্রতিশোধ হিসেবে তারা গ্রাম ঘেরাও করে ১১০ জনকে ধরে নিয়ে যায় এবং পাইলট হাইস্কুল ক্যাম্পে এনে কয়েকদিন নির্যাতন করে মাইজদি কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। ১০ই অক্টোবর ভোর ৫টায় কমান্ডার আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাবাজার ক্যাম্প ঘেরাও করে ত্রিমুখী আক্রমণ চালান। পাকবাহিনীও পাল্টা আক্রমণ চালায়। ৩ ঘণ্টার মতো যুদ্ধ চলে। এক পর্যায়ে পাকবাহিনী পিছু হটে। বাংলাবাজার ক্যাম্প যুদ্ধ-এ ৬ জন পাকসেনাসহ বেশ কয়েকজন রাজাকার নিহত হয় ও বহু আহত হয়।
২৮শে নভেম্বর ৯ জন রাজাকারের একটি দল লুটপাটের উদ্দেশ্যে পশ্চিম ছাগলনাইয়ায় গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করে। এ সময় সেখানে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজউদ্দৌল্যাহ মজুমদার এবং কমান্ডার মনির আহম্মদের নেতৃত্বে ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল তাদের ওপর আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে রাজাকাররা পিছু হটে। এতে ৩ জন রাজাকার নিহত হয়। ভারতের মিত্রবাহিনীসহ ছাগলনাইয়া সদরের মুক্তিবাহিনী ছাগলনাইয়া দীঘির পাড়ে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ চালালে যুদ্ধ হয়। সারাদিন থেমে-থেমে যুদ্ধ চলে। এ-যুদ্ধে ৩৫ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয় এবং বাকিরা আত্মসমর্পণ করে। ছাগলনাইয়া দীঘির পাড় ক্যাম্প যুদ্ধে প্রচুর অস্ত্র ও গোলা-বারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এ- যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ক্যাপ্টেন মাহফুজ এবং সুবেদার জালাল আহম্মদ। ২৯শে নভেম্বর পাঠান নগরে সর্বশেষ যুদ্ধ হয়। এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পাকবাহিনীর সঙ্গে এক ভয়াবহ যুদ্ধে লিপ্ত হন। দিন-রাতব্যাপী যুদ্ধের এক পর্যায়ে পাকবাহিনী তাদের বিশাল বহর নিয়ে মুহুরী নদী দিয়ে ফেনী সদর ক্যাম্পে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাঠান নগরসহ পাশের পরশুরাম, ফুলগাজী এবং ছাগলনাইয়া থানার বিশাল একটি অংশ নিয়ে মুক্তাঞ্চল ঘোষণা দেন। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের ফেলে যাওয়া ভারী অস্ত্রসহ বহু গোলা-বারুদ উদ্ধার করেন। এটি পাঠান নগর যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত।
ভারতে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থেকে অস্ত্র ও গোলা-বারুদ আনার জন্য রাধানগরের ৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল রাধানগর বাজার সংলগ্ন সিএন্ডবি রাস্তা অতিক্রম করার জন্য বাজারে অবস্থান করছিলেন। এ সময় পাকবাহিনী তাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ চালালে স্বল্প সময় যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জুলাই মাসের শেষদিকে ২২ জন রাজাকারের একটি দল পানুয়াঘাট বাজারে রাজাকার ক্যাম্প করার উদ্দেশ্যে বাজারের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিহত করার জন্য বাজারে অবস্থান নেন। রাজাকাররা কাছাকাছি এলে মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলেন। ভীত-সন্ত্রস্ত রাজাকাররা তখন অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করে। এ উপজেলার শুভপুর ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা এ অঞ্চলের ভেতর দিয়ে ভারতে যাওয়া-আসা করতেন। ভারতে যাওয়া-আসার পথে এখানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়। ২২শে সেপ্টেম্বর মধুগ্রাম চম্পক নগরে পাকসেনা ও রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপকে আক্রমণ করলে যুদ্ধ হয়। এ- যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। এটি চম্পক নগর যুদ্ধ- হিসেবে পরিচিত। ২৯শে নভেম্বর ছাগলনাইয়া উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন— জালাল আহমেদ, বীর প্রতীক (পিতা শেখ আহাম্মদ, দক্ষিণ কুহমা), তোফায়েল আহমেদ, বীর প্রতীক- (পিতা মুজাফফার আহমদ মজুমদার, পূর্ব সিলুয়া) ও বশির আহমেদ, বীর প্রতীক (পিতা ছফর আলী খন্দকার, দক্ষিণ বল্লভপুর)। ছাগলনাইয়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আলি হোসেন (পিতা দলিলের রহমান, লাঙ্গলমোড়া; ১৩ই ডিসেম্বর মোটরীর যুদ্ধে শহীদ), আবদুল ওয়াদুদ বাচ্চু (পিতা দুধু দারোগা, ১০ম শ্রেণির ছাত্র; অক্টোবর মাসে নিজ গ্রামে শহীদ), আলাউদ্দিন (পিতা শেখ আহম্মদ মজুমদার, দক্ষিণ আন্দারমানিক, রাধানগর; আগস্ট মাসে নিজ গ্রামে শহীদ), নাসিরউদ্দিন (পিতা শেখ আহম্মদ মজুমদার, দক্ষিণ আন্দারমানিক, রাধানগর; ষোলশহর ক্যান্টনমেন্ট যুদ্ধে শহীদ), নায়েক সুবেদার ফজলুল হক (পিতা আবদুল রহমান, দুর্গাপুর, সেনাসদস্য; ২৬শে মার্চ ঢাকা সেনানিবাস যুদ্ধে শহীদ), খন্দকার সৈয়দুর রহমান (পাঠান নগর), কামাল উদ্দিন (পাঠান নগর, বিএলএফ কমান্ডার, জগন্নাথ কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র; সত্যনগর গ্রাম ক্যাম্প যুদ্ধে শহীদ), মমিনুর রহমান (পিতা সুলতান আহম্মদ আমিন, দুর্গাপুর সিংহনগর; সাবাসপুর রেলওয়ে স্টেশন যুদ্ধে শহীদ), রুহুল আমিন (পিতা বেলায়েত হোসেন, শুভপুর; জিনার হাট যুদ্ধে শহীদ), আবদুল হক (পিতা আবদুল জব্বার, শুভপুর; জিনার হাট যুদ্ধে শহীদ)।
দক্ষিণ বল্লভপুরে গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে নাম সম্বলিত একটি স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেনের নামে তাঁর নিজ গ্রাম থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামের রেলওয়ে সড়ক পর্যন্ত ১ কিমি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদ বাচ্চুর নামে মুহুরী নদীর পাড় (তাঁর শহীদ হওয়ার স্থান) থেকে মুহুরীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ১ কিমি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। দাইয়াবিবি থেকে গথিয়া পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিনের নামে। [শেখ শাহজাহান বাকী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!