চৌধুরী বাজার-মীরগঞ্জ যুদ্ধ (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর)
চৌধুরী বাজার-মীরগঞ্জ যুদ্ধ (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর) সংঘটিত হয় ১৯শে সেপ্টেম্বর। এতে ইমতিয়াজ নামে এক পাকিস্তানি কমান্ডার নিহত হয়।
১৬ থেকে ১৯শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কে রফিকুল হায়দর চৌধুরী ও সুবেদার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ এম্বুশ রচনা করেন। প্রায় ১২ কিমি ব্যাপী এ এম্বুশে মুক্তিযোদ্ধারা ২০টি দলে প্রায় ৯০ জন অংশ নেন। চৌধুরী বাজার থেকে কাজীর দিঘী, কাফিলাতলী, মীরগঞ্জ, পানপাড়া ও ফতেহপুর পর্যন্ত এ দীর্ঘ এম্বুশে সুবেদার অলি উল্যা, সুবেদার আব্দুল মতিন, হাবিলদার আলতাফ, হাবিলদার তোফাজ্জল, নায়েক তছলিম, আবুল খায়ের, ছানা উল্যাহ, মুনছুর আহম্মদ, ধনু মিঞা, হামদে রাব্বী, এজাজ হোসেন, রাজ্জাকুল হায়দর, নিজাম উদ্দিন পাঠান, আবুল বাসার, আনোয়ারুল হক, হুমায়ুন কবির, তোফায়েল প্রমুখ নিজ-নিজ ট্রুপস নিয়ে অবস্থান নেন।
১৯শে সেপ্টেম্বর সকালবেলা প্রায় ২৫ জন পাকসেনার একটি দল দুটি সামরিক গাড়িতে করে লক্ষ্মীপুর থেকে রামগঞ্জ যাচ্ছিল। চৌধুরী বাজারের কাছে এলে তারা প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। এরপর কাজীর দিঘী, কাফিলাতলী, মীরগঞ্জ, পানপাড়া প্রত্যেক এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর আক্রমণ চালান। মীরগঞ্জের দক্ষিণে পাকবাহিনীর কমান্ডার ইমতিয়াজ গুলিবিদ্ধ হয়ে গাড়ি থেকে পড়ে যায় এবং সেখানেই নিহত হয় তার বাইনোকুলারটি মুক্তিযোদ্ধারা উদ্ধার করেন। এরপর পাকসেনারা দ্রুত পালিয়ে যায়। [গাজী গিয়াস উদ্দিন] চৌধুরী বাড়ি ট্রান্সফর্মার অপারেশন (সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ) পরিচালিত হয় ১২ই জুলাই রাত পৌনে ১২টায়। গ্রুপ কমান্ডার খোরশেদ আলম (গোদনাইল, ইউনিয়ন গোদনাইল, সিদ্ধিরগঞ্জ)-এর নেতৃত্বে আলী হোসেন, আব্দুল মতিন, এহসান কবীর রমজান, রোশন আলী, রিয়াজুল হক, আলী আক্কাস প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা এ অপারেশনে অংশ নেন। চৌধুরী বাড়িতে অবস্থিত ট্রান্সফর্মারটি উড়িয়ে দেয়া ছিল এ অপারেশনের উদ্দেশ্য। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ট্রান্সফর্মার পিলারে বিস্ফোরক স্থাপন করে ডেটোনেটর লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব পালন করেন। এ-সময় অন্য কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের কভার দেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রান্সফর্মারটি বিস্ফোরিত হয়ে উড়ে যায়। এ অপারেশন সফল হওয়ায় পাকিস্তানিদের সহায়তায় পরিচালিত কলকারখানা সব বন্ধ হয়ে যায়। পাকিস্তানি হানাদার সেনা, রাজাকার – ও -আলবদর-দের মনে ভীতির সৃষ্টি হয়। [রীতা ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড