চৌয়ারা গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর)
চৌয়ারা গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর) ৩ দফায় সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ২০ জনের মতো মানুষ শহীদ হন।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার চৌয়ারায় তিনটি পর্যায়ে গণহত্যার ঘটনা ঘটে। প্রথমত, পাকিস্তানি বাহিনী কুমিল্লা শহরের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর আশপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ৩১শে মে তারা চৌয়ারার উলুরচর, শাশাপাড়া, মাইট্টা রায়পুর ও জঙ্গলপুর থেকে কমপক্ষে ৮- ১০ জনকে ধরে এনে নারায়ণের দিঘির পশ্চিম পাড়ে দাঁড় করায়। সেখান থেকে চোখ বেঁধে ৬-৭ জনকে গুলি করে হত্যা করে। শহীদদের লাশ উলুরচর গ্রামে দাফন করা হয়। দ্বিতীয়ত, এর কয়দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী চৌয়ারা বাজারে ৮-১০ জনকে ধরে নিয়ে আসে। তারপর তাদের তালিকা অনুযায়ী ৪ জনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয় এবং ৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে। এ ৪ জনকে বিভিন্ন জায়গায় কবর দেয়া হয়। তৃতীয়ত, পাকিস্তানি বাহিনীর ভয়ে আত্মরক্ষার্থে কিছু লোক সুয়ারমার দিঘির পাড়ে আশ্রয় নিয়েছিল -রাজাকার-রা তাদের দেখিয়ে দিলে ওখানেই ৭ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। তাদের দিশাবন্দ এলাকায় সমাহিত করা হয়। শহীদদের মধ্যে ১৫ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- কোরবান আলী, আলী আশরাফ, আবদুল মতিন, আলী আজ্জম, আলী আহমদ, আবদুল আজিজ, নাজির আহমদ, ছিদ্দিকুর রহমান, শামসুল হক, সাদেকুর রহমান, হারুন মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, ফজলু মিয়া, দুদু মিয়া ও জুনাব আলী। গণহত্যা ও গণকবরের স্থানগুলি সংরক্ষিত হয়নি এবং শহীদদের স্মরণে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। [মামুন সিদ্দিকী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড