You dont have javascript enabled! Please enable it! চুলাবাজার স্মৃতিসৌধ (মনোহরদী, নরসিংদী) - সংগ্রামের নোটবুক

চুলাবাজার স্মৃতিসৌধ (মনোহরদী, নরসিংদী)

চুলাবাজার স্মৃতিসৌধ (মনোহরদী, নরসিংদী) নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার চুলাগ্রামে অবস্থিত। চুলাগ্রাম একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ। ১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চের কালো রাতের পর ক্রমসংগঠিত সংগ্রামী জনতা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই মাসে চুলাগ্রামে মুক্তিবাহিনীর একটি ক্যাম্প স্থাপিত হয়। গোতাশিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ-এর সধারণ সম্পাদক আ. রশিদ, ইউপি সদস্য কাজী আশরাফ উদ্দিন মিয়া, আলহাজ্ব শামসুদ্দিন ভূঁইয়া, নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া, মহসীন ভূঁইয়া, শফিউদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে চুলা ভূঁইয়া বাড়িতে ওসমান গনি এবং আকমল হোসেনের নেতৃত্বে ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়। এ গ্রামের সন্তান হারুন-অর-রশীদ ভূঁইয়া, মোস্তফা কামাল ভূঁইয়া তখন মুক্তিসংগ্রামে লিপ্ত। গ্রামের আপামর জনসাধারণের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় তৎপরতা চালাতে থাকেন। ভূঁইয়া বাড়ির এ ক্যাম্প থেকে মুক্তিবাহিনী হাতিরদিয়া, পোড়াদিয়া, বেলাব, মনোহরদী প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সফল অপারেশন পরিচালনা করে। প্রায় তিন মাস তাঁরা এ গ্রামে অবস্থান করেন। তাঁদের স্মৃতি ধরে রাখতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এ কে এম বজলুর রহমান হাতিরদিয়া- বেলাব রোডে চুলাবাজারে একটি নান্দনিক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন। এটি দুটি অংশে বিভক্ত- মূল বেদির ভিত্তি এবং বেদির ওপর মুক্তিযোদ্ধার হাতে একটি রাইফেল। মূল বেদিটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ছয় ফুট, প্রস্থে চারফুট এবং উচ্চতায় পাঁচ ফুট। মূল বেদির চারপাশে চারটি মনুমেন্ট রয়েছে। পশ্চিম পাশে বাংলাদেশের ম্যাপ সম্বলিত মুক্তিবাহিনী, দক্ষিণ পাশে পাকবাহিনীর নির্যাতন, পূর্ব পাশে প্রতিরোধের চিত্র এবং উত্তর পাশে বিজয়ী জনতা। মূল বেদির ওপর মুক্তিযোদ্ধার মুষ্টিবদ্ধ হাত। হাতে একটি রাইফেল, যার উচ্চতা প্রায় ৩ ফুট। এলাকার হাজারো মানুষের কাছে এ স্মৃতিসৌধটি গৌরবের, গর্বের ও অহংকারের। [এম আর মাহবুব]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড