You dont have javascript enabled! Please enable it! চিলাহাটি বধ্যভূমি (ডোমার, নীলফামারী) - সংগ্রামের নোটবুক

চিলাহাটি বধ্যভূমি (ডোমার, নীলফামারী)

চিলাহাটি বধ্যভূমি (ডোমার, নীলফামারী) নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উত্তর পাশে চিলাহাটি ফুলবাড়ী খানকা শরীফে অবস্থিত। চিলাহাটি নীলফামারী জেলার একটি সীমান্তবর্তী স্থল বন্দর। ভারতের সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ থাকায় এখানে ব্যবসায়ী, শ্রমিক, মজুর শ্রেণির লোকজনের যাতায়াত বেশি ছিল। পাকবাহিনী মধ্য এপ্রিলে চিলাহাটিতে ঘাঁটি স্থাপন করে। পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রটি ছিল পাকবাহিনীর একটি চেক পয়েন্ট এবং একই সঙ্গে এটি নির্যাতনকেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। সাধারণ মানুষ চলাচলের সময় তাদের এখানে চেক করা হতো যাতে ছদ্মবেশে কোনো মুক্তিযোদ্ধা দেশে ঢুকতে না পারে। মুক্তিযুদ্ধের নয়মাস এখানে স্বাধীনতার পক্ষের ও নিরীহ অসংখ্য মানুষজনকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। একদিন এ বধ্যভূমিতে প্রকাশ্যে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে পুঁতে রাখা হয়। পাকবাহিনীর হত্যা এবং নির্যাতনে স্থানীয় রাজাকার-রা সহায়তা করত। তারা শরণার্থীদের ওপর আক্রমণ করে লুটপাট চালাত। লুটে বাধা দিলে তাদেরকে পাকসেনা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করত।
চিলাহাটি এলাকার রাজাকার ইয়াসিন আলী, জিল্লুর রহমান ও আফিজউদ্দিনসহ অন্যান্য রাজাকাররা পাকবাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে সহায়তা দেয়। এ ক্যাম্পটি নারীনির্যাতনেরও একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। রাজাকাররা শরণার্থী দলগুলোর ওপর আক্রমণ চালিয়ে যুবতী নারীদের ধরে নিয়ে আসত এবং পাকবাহিনী তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন করত। ১২ই ডিসেম্বর চিলাহাটি মুক্ত হওয়া পর্যন্ত পাকবাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় এখানে অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চালায়। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড