চিলমারী যুদ্ধ (দৌলতপুর, কুষ্টিয়া)
চিলমারী যুদ্ধ (দৌলতপুর, কুষ্টিয়া) সংঘটিত হয় ২২শে আগস্ট, ৩১শে আগস্ট, ৫ই সেপ্টেম্বর ও ১২ই সেপ্টেম্বর মোট ৪ দিন। চিলমারী ইউনিয়নের কমান্ডার মো. আব্দুল মালেক, মো. আলাউদ্দীন, মো. শাহজাহান আলী, মো. মোজাম্মেল হক, মো. জব্বার দেওয়ান ও মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সংঘটিত এ-যুদ্ধে অর্ধশতাধিক পাকসেনা নিহত হয়। পরাজয়ের পর চিলমারী ক্যাম্প গুটিয়ে চলে যাওয়ার পথে পাকিস্তানি বাহিনী মানুষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে।
চিলমারীতে পাকহানাদার বাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল। চিলমারী ইউনিয়নের আমদানী ঘাট, চিলমারী, জোতাশাহী, বাজুমারা ও উদয়নগরে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এ-যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
চিলমারী ইউনিয়নের ছাত্র ও যুব সমাজের প্রায় ২৫০ জন ভারতের শিকারপুর, যমশেদপুর, করিমপুর, কড়ইগাছি ও বেতাই ক্যাম্পে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য ভর্তি হন। এর মধ্যে দেড়শতাধিক ছাত্র ও যুবক ভারতের বিহারের বাকুলিয়া, রামপুরহাট, জলঢাকা ও তেলঢালা ক্যাম্পে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। চিলমারী তহসিল অফিস ও চিলমারী হাইস্কুলে পাকবাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। চিলমারী ইউনিয়নে অনেক মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করছেন এ খবর পেয়ে পাকিস্তানি হানাদাররা এ ইউনিয়ন দখল করার চেষ্টা করলে ২২শে আগস্ট, ৩১শে আগস্ট, ৫ই সেপ্টেম্বর এবং ১২ই সেপ্টেম্বর তাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে অর্ধশতাধিক পাকসেনা নিহত হয় এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে টিকতে না পেরে ৮ দিন পর পাকসেনারা ক্যাম্প গুটিয়ে হোসেনাবাদ ক্যাম্পে ফিরে যায়। যাবার সময় তারা বাজুমারা, জোতাশাহী ও চররামকৃষ্ণপুর গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। চিলমারী যুদ্ধে কমান্ডার মো. আলাউদ্দীন, আব্দুল মালেক, মো. শাহজাহান আলী, মোজাম্মেল হক ও আনোয়ার হোসেন নেতৃত্ব দেন। [মো. ছাদিকুজ্জামান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড