চারানের যুদ্ধ (কালিহাতী, টাঙ্গাইল)
চারানের যুদ্ধ (কালিহাতী, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ২২শে মে। এতে ১৩ জন পাকসেনা নিহত এবং ১৫-১৬ জন আহত হয়। তাদের ফেলে যাওয়া ১ বাক্স গুলি ও ৪টি রাইফেল মুক্তিযোদ্ধারা হস্তগত করেন।
কালিহাতী থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পূর্বে চারান গ্রাম। ২২শে মে পাকবাহিনীর এক প্লাটুন সেনা এ গ্রামে লুটতরাজ করে এবং ১০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম- চারানে পাকবাহিনীর মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর সঙ্গে সাইদুর রহমান, খোরশেদ আলম তালুকদার, আবদুস সবুর খান, মনিরুল ইসলাম, আবদুল হালিম, নাসির উদ্দিন ও শামসুসহ মাত্র ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কাদের সিদ্দিকী সহযোদ্ধাদের নিয়ে বল্লা-কালিহাতী রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। পাকবাহিনী কালিহাতীর দিকে ফেরার পথে মুক্তিযোদ্ধাদের রেঞ্জের মধ্যে আসতেই কাদের সিদ্দিকীর হাতের এলএমজি গর্জে ওঠে। সঙ্গে-সঙ্গে গর্জে ওঠে সহযোদ্ধাদের হাতের অস্ত্রও। বৃষ্টির মতো পাল্টা গুলি ছোড়ে হানাদার বাহিনী। একটানা ৪ ঘণ্টা উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ-যুদ্ধে ১৩ জন পাকসেনা নিহত এবং ১৫-১৬ জন আহত হয়। যুদ্ধ শেষে শত্রুদের ফেলে যাওয়া ১ বাক্স গুলি ও ৪টি রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। চারানের যুদ্ধই কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ। এ-যুদ্ধে জয়লাভের ফলে মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণের মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বের প্রতি মুক্তিযোদ্ধাদের আস্থা বেড়ে যায়। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড