You dont have javascript enabled! Please enable it!

চিতনা গণহত্যা (নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

চিতনা গণহত্যা (নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় নভেম্বরের মাঝামাঝি। এতে ১৫ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
গুনিয়াউক ইউনিয়নের চিতনা গ্রামের বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারগুলো নানাভাবে হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়। রাজাকার-রা বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এ গ্রামের অধিবাসীদের ওপর চরম নির্যাতন চালায়। গ্রামের হিন্দু পরিবারগুলোকে ধর্মান্তরিত হতে চাপ দেয়। তারা সম্মত না হলে তাদেরকে হত্যার হুমকি দেয়। ফলে প্রাণভয়ে অনেকেই কলেমা পড়ে মুসলমান হবার স্বীকৃতি জানায়। শিক্ষিত নিধু ধর এবং কয়েকজন সাধারণ কৃষক এ ব্যাপারে আপত্তি জানায়। এতে তাদের ওপর রাজাকাররা ক্ষিপ্ত হয়। পাকিস্তানি বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এসে রাজাকাররা গ্রামের বাড়িগুলোতে আগুন লাগায়। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি বাহিনীর ভয়ে হিন্দু-মুসলমান সকলেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। গ্রামের নিধু ধর (৫০, চাকরিজীবী), প্রতাপ (৫৫, গৃহস্থ) ও কৃষ্ণধন (৪০, শ্রমিক)-কে রাজাকাররা বন্দি করে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে। নিধু ধরকে একটি আম গাছের সঙ্গে বাঁধা হয়। তাঁকে বাঁচাবার জন্য গ্রামের মাওলানা সিদ্দিক আহমদ পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে রাজাকার বাহিনীর এক সদস্যের নিকট সুপারিশ করেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। এরপর পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা ধৃত তিনজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যার পর তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। হনাদার বাহিনী চলে যাবার পর গ্রামবাসী নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে এসে নিহত তিনজনকে চিতনা শ্মশানে গর্ত করে মাটিচাপা দেয়। গুনিয়াউক উত্তর পাড়ার একজন মহিলা রাজাকারদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। এছাড়া এলাকার ১২ জন মহিলাকে তারা গুলি করে হত্যা করে। [জামিল ফোরকান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!