You dont have javascript enabled! Please enable it!

চান্দেরাটি যুদ্ধ (ভালুকা, ময়মনসিংহ)

চান্দেরাটি যুদ্ধ (ভালুকা, ময়মনসিংহ) সংঘটিত হয় ১২ই নভেম্বর। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আড়াই ঘণ্টা ধরে পাকহানাদারদের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলে। এতে ১১ জন পাকসেনা ও ৯ জন রাজাকার- নিহত হয়। অপরপক্ষে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকহানাদাররা পালিয়ে ভালুকা ঘাঁটিতে চলে যায়।
ভালুকা থানা সদর থেকে ৮ কিমি পূর্বদিকে চান্দেরাটি গ্রাম। ১২ই নভেম্বর রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে একদল পাকসেনা চান্দেরাটি গ্রাম লুট করতে রওনা দেয়। তাদের আগমনের খবর সিগনালম্যান মারফত প্লাটুন কমান্ডার তফির উদ্দিন তালুকদার জানতে পারেন। তিনি কালবিলম্ব না করে এ খবর দ্রুত কংশেরকুল উচ্চ বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে পৌঁছে দেন। এ খবর জানার পর সেকশন কমান্ডার শমসের ডাক্তারের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকসেনাদের ওপর আক্রমণের জন্য যাত্রা করেন।
মুক্তিযোদ্ধারা সূতিয়া নদী থেকে আধা কিমি দূরে চান্দেরাটি গ্রামে উঁচু-নিচু টিলা ঘেঁষে পজিশন নিয়ে অবস্থান করতে থাকেন। দুপুর ২টার দিকে রাস্তা দিয়ে পাকসেনারা চান্দেরাটি গ্রামে প্রবেশ করার সময় মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালান। উভয় পক্ষে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর পাকসেনারা পালিয়ে ভালুকা ঘাঁটিতে চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা চান্দেরাটি গ্রামের অর্ধশতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
চান্দেরাটি যুদ্ধে ১১ জন পাকসেনা ও ৯ জন রাজাকার নিহত হয়। অন্যদিকে, সেকশন কমান্ডার শমসের ডাক্তার, সিরাজুল হক মৌল্লাসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এর মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় ৪ জনের মধ্যে ৩ জনকে মাহমুদপুর মসজিদ সংলগ্ন মাঠে এবং অন্যজনকে (হিন্দু ধর্মাবলম্বী) স্মৃতিয়া নদীর পাড়ে সমাহিত করা হয়।
চান্দেরাটি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মো. চাঁন মিয়া (ভালুকা), মো. তফির উদ্দিন তালুকদার (ভালুকা), মো. আ. হাই (ভালুকা), মো. নূরুল হক মাস্টার (বিরুনিয়া), মো. নূরুল ইসলাম (বিরুনিয়া), মো. আলফাজ উদ্দিন (ভালুকা), মো. আব্দুস ছাত্তার (ভালুকা) প্রমুখ। [মো. শফিকুল ইসলাম কাদির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!