চাঁদশী কিনাই সিকদার বাড়ি গণহত্যা (গৌরনদী, বরিশাল)
চাঁদশী কিনাই সিকদার বাড়ি গণহত্যা (গৌরনদী, বরিশাল) সংঘটিত হয় ১৫ই মে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী শহীদ হন। গৌরনদী উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন চাঁদশী। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চাঁদশী মেলা বসে চাঁদশী বাজারের দক্ষিণ পাশে। মেলার উত্তর পাশে কিনাই সিকদারের বাড়ি। ১৫ই মে সকাল ১০টার দিকে বাঙ্গিলা, গৌরনদী ক্যাম্প থেকে রামসিদ্ধি বাজার হয়ে পাকিস্তানি বাহিনী চাঁদশী বাজারে উপস্থিত হয়। পথিমধ্যে তারা রামসিদ্ধি বাজারে হত্যা ও অগ্নিসংযোগ করে। গ্রামের মানুষ দূর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে এবং অনেকে ভয়ে কিনাই সিকদারের বাড়ির জঙ্গলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনী কিনাই সিকদারের বাড়িতে কাউকে না পেয়ে পুকুরপাড়, ডোবা ও জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা নারী-পুরুষদের দেখতে পেয়ে ব্রাশফায়ারে তাদের হত্যা করে। এ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন মাহমুদা বেগম। হানাদার বাহিনীর গুলিতে মায়ের কোলে থাকা শিশুসহ উভয়ে নিহত হয়। গণহত্যার পর এলাকায় কোনো পুরুষ না থাকায় আছিরন বিবি লাশগুলো টেনে যতীন বাড়ৈর পানের বরজের পাশে গণকবর দেয়। এ গণহত্যার যারা শিকার, তাদের মধ্যে ১০ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন— দক্ষিণ চাঁদশী গ্রামের বাসু কর (৬৫) (পিতা বিনয় কর), গর্ভবতী নারী রেনু বালা (৩৫) (স্বামী যাদব দত্ত), বিহারী দত্ত (৬৫) (পিতা তারাপদ দত্ত), আবেদ আলী সিকদার (৪০) (পিতা আশ্রাব আলী মিয়া), উত্তর চাঁদশী গ্রামের চিত্ত ঘরামী (৪৫), কানন বালা (৩৫) (পিতা পরিমল), কালী রানী (৩৬) (স্বামী কেশব দত্ত), কাজলী (৭) (পিতা কেশব দত্ত), বিষ্ণু (১০) (পিতা কেশব দত্ত) ও উজ্জ্বলী (২৫) (স্বামী মিহির সিকদার)। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড