বীর প্রতীক চাঁন মিয়া
চাঁন মিয়া, বীর প্রতীক সুবেদার ও দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার গোয়াগাছিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ফজর আলী বেপারী এবং মাতার নাম হাসেবান বিবি।
চাঁন মিয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সুবেদার পদে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তাঁর কর্মস্থল ছিল কুমিল্লা সেনানিবাস ২৫শে মার্চ পাকহানাদার বাহিনী এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর গণহত্যা শুরু করলে ২৭শে মার্চ তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করার সংকল্প নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি ক্যাপ্টেন সুবেদ আলী ভূঁইয়ার কমান্ডে যুদ্ধ করেন। দিনের বেলায় চাঁন মিয়ার দল শত্রুর অবস্থান রেকি করত এবং রাতে অপারেশন চালাত। এরূপ একটি অপারেশন ছিল সিদলাই এলাকায় শত্রুর দুটি ঘাঁটি আক্রমণ। এতে মুক্তিযোদ্ধারা দুটি দলে বিভক্ত হন। এক দলের নেতৃত্বে ছিলেন চাঁন মিয়া। অন্য দলের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন সুবেদ আলী ভূঁইয়া। তাঁরা দুদিক থেকে শত্রুর অবস্থানের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি নেন। হঠাৎ দেখতে পান ৩০-৪০ জনের একটি পাকিস্তানি সেনা ও -রাজাকার- চাঁন মিয়ার দলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রেইঞ্জের মধ্যে পৌঁছামাত্রই চাঁন মিয়ার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করেন। এতে অনেক পাকসেনা নিহত হয় এবং তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
২ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় ও বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক চাঁন মিয়া-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৫ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম কাশমেরী খানম। ১৯৭৭ সালের ২৯শে অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড