চন্দনপুরা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর)
চন্দনপুরা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালিত হয় অক্টোবর মাসে। চট্টগ্রাম শহরের চন্দনপুরা প্রধান সড়কের ওপর চারদিকে দোকান বেষ্টিত ঘনবসতির মধ্যে এ ক্যাম্পের অবস্থান ছিল। ক্যাম্পের সামনে চেক পোস্ট বসিয়ে রাজাকার রা সাধারণ মানুষের ওপর নানারকম নির্যাতন চালাত। চেক পোস্টের কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহেও বাধার সৃষ্টি হতো। তাই মুক্তিযোদ্ধারা এক পর্যায়ে এ ক্যাম্প আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শান্তনু চক্রবর্তীর বাসায় বসে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক দানু অপারেশনের মূল পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। অপারেশনের সার্বিক দায়িত্বও তিনি পালন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নাসিরুদ্দীন চৌধুরী (বর্তমানে পূর্বদেশ পত্রিকার সাংবাদিক) ও মাহবুবুর রহমান।
অপারেশনের দিন গভীর রাতে নাসিরুদ্দীন ও মাহবুবুর রহমান ছদ্মবেশে রাজাকার ক্যাম্পের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন। রাজাকাররা তখন খোশগল্পে মশগুল ছিল। এমতাবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে তাদের আক্রমণ করেন। সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ব্রাশ ফায়ারের সামান্য প্রতিরোধ করতেও ব্যর্থ হয়। তাই ঘটনাস্থলেই ৮ জন রাজাকার নিহত ও ১০ জন আহত হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়।
চন্দনপুরা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশনের এই সফলতা চট্টগ্রামের রাজাকার বাহিনীর মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। রাজাকারদের এ ক্যাম্পটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।
অন্যান্য অপারেশনের মতো এ অপারেশনও শহরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এ অপারেশনের খবর গুরুত্বসহকারে প্রচারিত হয়। [সাখাওয়াত হোসেন মজনু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড