বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের রাজনীতিবিদ চন্দ্র রাজেশ্বর রাও
চন্দ্র রাজেশ্বর রাও (১৯১৪-১৯৯৪) ভারতের রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯১৪ সালের ৬ই জুন অবিভক্ত ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের কৃষ্ণা জেলার মঙ্গলাপুরাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাচিলিপত্তমের হিন্দু উচ্চ বিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশাখাপত্তম মেডিকেল কলেজে অধ্যয়ন করেন।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী চন্দ্র রাজেশ্বর রাও তেলেঙ্গানা বিদ্রোহের শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত। ১৯৩১ সালে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)-তে যোগদান করার পর তিনি নিজ জেলার যুবক, শ্রমিক ও কৃষকদের সংগঠিত করেন। পরবর্তীকালে তিনি দলের জেলা সম্পাদক, অন্ধ্র প্রদেশের সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও নিখিল ভারত কিষান সভার সহ-সভাপতি ছিলেন। সিপিআই-এর জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি দীর্ঘ ২৮ বছর (১৯৬৪-১৯৯২) দায়িত্ব পালন করেন। ৭০ ও ৮০-র দশকে ভূমি সংগ্রামের সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ১৯৯২ সালে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যা, আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলন কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয়ে লেখালেখি করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র রাজেশ্বর রাও মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে বাংলাদেশের মানুষের পাশে ছিলেন। তিনি মস্কোতে আয়োজিত সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জোরালো বক্তব্য প্রদান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের সমর্থন আদায়ে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম ও কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৯৪ সালের ৯ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০শে অক্টোবর ২০১২ চন্দ্র রাজেশ্বর রাও-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড