You dont have javascript enabled! Please enable it!

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল পরীক্ষাকেন্দ্র অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর)

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল পরীক্ষাকেন্দ্র অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালিত হয় ২৮শে মে। তখন এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছিল। পাক সরকার দেশের অবস্থা স্বাভাবিক আছে এটা প্রমাণ করার জন্য পরীক্ষা গ্রহণের সমস্ত আয়োজন করে। পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি করে পরীক্ষার্থীদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বিধানের জন্য কেন্দ্রের চারদিকে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সরকারের এ অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁদের পক্ষ থেকে পরীক্ষা বর্জনের জন্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র- থেকে এ আহ্বান প্রচারিত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পাকসেনাদের আক্রমণ করেন। মাত্র দুজন মুক্তিযোদ্ধা এ অপারেশনে অংশ নেন। তাঁরা হলেন ফয়েজুর রহমান ও গরীব উল্লাহ্। অপারেশনের দিন সকালে কলেজিয়েট স্কুলের সামনে দুটি ট্রাকের ওপর প্রায় ৪০ জন পাক মিলিশিয়া দাঁড়ানো ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা স্কুলের পার্শ্ববর্তী স্টেশন কলোনি থেকে ট্রাকভর্তি মিলিশিয়াদের ওপর দুটি শক্তিশালী গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। প্রচণ্ড শব্দে গ্রেনেড দুটি বিস্ফোরিত হলে ৭ জন মিলিশিয়া সদস্য নিহত ও ১১ জন আহত হয়। এ অপারেশনের খবর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এবং বিবিসি থেকে প্রচারিত হয়।
এ অপারেশনের কারণে মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্র জনশূন্য হয়ে যায়। কলেজিয়েট স্কুলের ঘটনায় চট্টগ্রাম শহরের সকল কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা ভীত হয়ে পড়ে। ফলে বেশির ভাগ কেন্দ্রেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। শুধু ছাত্র- ছাত্রীরাই নয়, অনেক কেন্দ্রে শিক্ষকরাও অনুপস্থিত থাকেন। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক এবং এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে চলছে পাকিস্তান সরকারের এ দাবি কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে এ অপারেশনের ফলে বিশ্ববাসীর নিকট মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য সফল হয়। [সাখাওয়াত হোসেন মজনু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!