You dont have javascript enabled! Please enable it! চট্টগ্রাম টাওয়ার হোটেল অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) - সংগ্রামের নোটবুক

চট্টগ্রাম টাওয়ার হোটেল অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর)

চট্টগ্রাম টাওয়ার হোটেল অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালিত হয় নভেম্বর মাসে। শহরের চেরাগী পাহাড়ের মোড়ে অবস্থিত এ হোটেলে আলশামস বাহিনীর সদর দপ্তর ছিল। এখান থেকে আলশামস বাহিনীর কুখ্যাত হামিদুল কবির চৌধুরী খোকা ও অন্যরা মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন করত। তাদের এই নির্যাতন বন্ধ করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধারা টাওয়ার হোটেলস্থ আলশামসের এই দপ্তরে এ অপারেশন পরিচালনা করেন। অপারেশনের লক্ষ্য ছিল পাকবাহিনীর এ- দেশীয় দোসরদের শক্তিক্ষয় করা। তাছাড়া এ-সময় মুক্তিযুদ্ধ দ্রুত চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলন। চট্টগ্রাম শহর গেরিলা বাহিনী প্রধান মৌলভী সৈয়দের বেইজ কমান্ড এ অপারেশনের পরিকল্পনা করেন। আর তাঁদের দলের সদস্য চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র এবং ইউওটিসি-র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অস্ত্র ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান খান ও আনিস তা কার্যকর
করেন।
ঘটনার দিন হাবিবুর রহমান খান ও আনিস টেক্সিযোগে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে টাওয়ার হোটেলে অবস্থানরত আলশামস বাহিনীর সদস্যদের ওপর অকস্মাৎ দুটি শক্তিশালী গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। পুরো অপারেশন এত দ্রুত ও নিখুঁতভাবে সম্পন্ন হয় যে, আলশামস বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে কোনোরূপ প্রতিরোধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন শেষ করে বাইরে অপেক্ষমাণ ট্যাক্সিতে করে নিরাপদ জায়গায় চলে যান। গ্রেনেড আক্রমণে আলশামস বাহিনীর ২০ জন সদস্য আহত হয়। এ আক্রমণের খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি, বিশেষকরে পাকবাহিনীর এ-দেশীয় দোসররা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। [সাখাওয়াত হোসেন মজনু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড