ঘোনাবাড়ীর যুদ্ধ (কালিহাতী, টাঙ্গাইল)
ঘোনাবাড়ীর যুদ্ধ (কালিহাতী, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় অক্টোবর মাসে। এতে ১৫-২০ জন পাকসোনা নিহত হয়। পক্ষান্তরে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এবং ৩ জন আহত হন। কালিহাতী সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ঘোনাবাড়ী গ্রাম। বল্লা বাজার থেকে গ্রামটির দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। বল্লা বাজারে পাকবাহিনীর একটি শক্তিশালী ক্যাম্প ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পটি দখলের জন্য মাঝে- মাঝেই হামলা চালাতেন। অক্টোবর মাসে কাদেরীয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার মনিরুল ইসলাম কোম্পানির প্লাটুন কমান্ডার আমীর আলীর নেতৃত্বে মোতালেব হোসেন তরফদার রকেট (পশ্চিম ভূঞাপুর), আবদুর রহিম আকন্দ আবুল (পশ্চিম ভূঞাপুর), সাইফুল ইসলাম তোতা (খুপিবাড়ী), আকতার হোসেন রেফাজ (খুপিবাড়ী), হযরত আলী (ফলদা), শামসুল হক (ফলদা), আনোয়ার হোসেন রমজান (বামনহাটা) প্রমুখসহ ১৫-২০ জন মুক্তিযোদ্ধা ঘোনাবাড়ী গ্রামের একটি বাড়িতে অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধারা ঘোনাবাড়ীতে অবস্থান করছেন এ সংবাদ রাজাকারদের মাধ্যমে বল্লা বাজারে স্থাপিত ক্যাম্পে অবস্থানরত হানাদাররা জানতে পারে এবং ৫০-৬০ জন পাকসেনা কয়েকটি নৌকাযোগে দক্ষিণ দিকের খাল দিয়ে ঘোনাবাড়ীতে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে ফেলে আক্রমণ শুরু করে। সঙ্গে-সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন। তিন ঘণ্টাব্যাপী সম্মুখ যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে ১৫-২০ জন পাকসোনা নিহত হয়। পক্ষান্তরে হানাদারদের গুলিতে ভূঞাপুরে মোতালেব হোসেন তরফদার রকেট ও তেঘরীর আমীর আলীসহ ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। হযরত আলী ও শামসুল হকসহ ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। এমতাবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণ করেন। এদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপর একটি গ্রুপ শহীদ দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে পার্শ্ববর্তী বেতুয়া গ্রামে নিয়ে গিয়ে সমাহিত করেন। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড