ঘোড়াদিয়া গণহত্যা (নরসিংদী সদর)
ঘোড়াদিয়া গণহত্যা (নরসিংদী সদর) সংঘটিত হয় ১৪ই জুন। এতে ১২ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। ঘোড়াদিয়া একটি গ্রাম। গ্রামটি নরসিংদী সদরের টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনে স্থাপিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রধান ঘাঁটি থেকে মাত্র দেড় মাইল পূর্ব-উত্তরে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী এ গ্রামটিতে বর্বরতম নৃশংসতা চালায়। স্থানীয় রাজাকার-দের সহায়তায় তারা এখানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। ঘোড়াদিয়ার পার্শ্ববর্তী গ্রামের মতিউর রহমান শিকদার ছিল রাজাকার। তার সহযোগী ছিল বংশিরদিয়ার রাজাকার মোসলা ও রৌশন আলী। জুন মাসের ১৪ তারিখ রাজাকার মতি পাকবাহিনীর কয়েকজন সৈন্য নিয়ে রাত ৩টার দিকে ঘোড়াদিয়া গ্রামে হানা দেয়। গ্রামে ঢুকে তারা প্রথমে ৫ জন হিন্দুকে তুলে নিয়ে নরসিংদী- মদনগঞ্জ রোডের ৫ নং ব্রিজের কাছে গুলি করে হত্যা করে। পরে ঐ রাতেই খুব সকালে আবার ঐ গ্রামে হানা দিয়ে ৭ জনকে ধরে নিয়ে খাটারা ব্রিজের নিচে হত্যা করে। এরপর ১৯শে জুন বেলা ১০টার দিকে মতি রাজাকার এ গ্রামের মুরারী মোহন সাহাকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। পাকবাহিনী তাকে শীলমান্দির বিলে নিয়ে হত্যা করে। হানাদাররা এ গ্রামে মোট ১৫ জনকে হত্যা করে। শহীদরা হলেন- মুরারী মোহন সাহা (পিতা ভগবান সাহা), সুরেন্দ্র রায় (পিতা গৌর চান রায়), ভোলানাথ সাহা (পিতা ঠাকুরদাস সাহা), হরলাল সাহা (পিতা ভগবান সাহা), নারায়ণ চক্রবর্তী (পিতা বলরাম চক্রবর্তী), শম্ভুনাথ সাহা (পিতা মনমোহন সাহা), দেবেন্দ্র চন্দ্র সাহা (পিতা দাগুরাম সাহা), মনমোহন সাহা, হরেন্দ্র সাহা (পিতা প্রসন্ন কুমার সাহা), সুরেন্দ্র চক্রবর্তী (পিতা প্রসন্ন কুমার চক্রবর্তী), লাল মোহন সাহা (পিতা নবীন সাহা), নরেশ ঋষি দাস, নীরদ ঋষি দাস, রাধা গোবিন্দ সাহা এবং রাজেন্দ্র চন্দ্র সাহা। [মুহম্মদ ইমাম উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড