You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.19 | ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেশন (নরসিংদী সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেশন (নরসিংদী সদর)

ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেশন (নরসিংদী সদর) পরিচালিত হয় ১৯শে নভেম্বর। এর ফলে এ এলাকার পাকসেনাদের সঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশের টেলিযোগযোগ চরমভাবে ব্যাহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের কৌশল অনুযায়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা এবং হানাদারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন <সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ওরফে ন্যাভাল সিরাজের মুক্তিযোদ্ধারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী থানা কমান্ডার ইমাম উদ্দিনের গ্রুপের কালাম, হারিছ খান ও রশিদকে এ অপারেশনের জন্য পাঠানো হয়। ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ছিল তৎকালীন পাক জুট মিলস (বর্তমান বাংলাদেশ জুট মিলস)-এর ঠিক উত্তর-পূর্ব কোণে। মিলের পূর্বপাশ দিয়ে দক্ষিণ থেকে যে রাস্তাটি উত্তরে বাজারের দিকে চলে গেছে, তার পূর্বপাশে মিলের শেষ মাথায় ছিল এক্সচেঞ্জটির অবস্থান। মিলের অভ্যন্তরে হানাদারদের ক্যাম্প থাকায় মিলের পূর্বদিকের রাস্তা দিয়ে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে মিলের একটু উত্তর দিকে এনাম মিয়াদের বাড়ির পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি ছিল, সেদিক দিয়ে যাওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ অনুযায়ী তাঁরা সেদিক দিয়েই এসে এক্সচেঞ্জকে লক্ষ করে পশ্চিম দিকের জানালা দিয়ে পরপর দুটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বাজারের দিকে দৌড়ে চলে যান। সঙ্গে-সঙ্গে 1 বিকট শব্দে গ্রেনেডদুটি বিস্ফোরিত হলে এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। মিলের ভেতরে অবস্থিত হানাদার বাহিনী তাদের ওপর আক্রমণের আশঙ্কায় মিলের ভেতরে থেকেই গুলিবর্ষণ করতে থাকে। অত্যন্ত সফল এ অপারেশনের ফলে টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, এটি আর মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ফলে ঢাকা ও অন্যান্য স্থানের সঙ্গে তাদের টেলিফোন যোগাযোগ। সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত এক্সচেঞ্জটি আর সচল হয়নি। [মুহম্মদ ইমাম উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড