ঘোনাবাড়ি গণহত্যা (কালিহাতী, টাঙ্গাইল)
ঘোনাবাড়ি গণহত্যা (কালিহাতী, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসে। ঘোনাবাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলা সদর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে নাগবাড়ি ইউনিয়নের অন্তর্গত হিন্দু অধ্যুষিত একটি গ্রাম। এ গ্রামের সাগরবাশি সাহা ও অমৃত সাহার বাড়িতে মাঝে-মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করতেন। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে এ খবর শুনে পাকসেনারা আগস্ট মাসের কোনো একদিন গ্রামটিতে প্রবেশ করে। সেদিন অমৃত সাহার বাড়িতে কাদেরিয়া বাহিনী-র কোম্পানি কমান্ডার মনিরুল ইসলাম মনিরসহ ১৫-২০ জন মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করছিলেন। পাকবাহিনী অতর্কিতে তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা এ আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। তাঁদের সংখ্যাও ছিল অনেক কম। তা সত্ত্বেও প্রায় দু-ঘণ্টা গুলি বিনিময়ের পর পিছু হটে তাঁরা অন্যত্র চলে যান। এ-যুদ্ধে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এরপর পাকসেনারা গ্রামের একই পরিবারের তিনজনসহ মোট নয়জন নিরপরাধ হিন্দুকে বাড়ি থেকে ধরে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে এবং লাশগুলো ফটিকজানী নদীতে ফেলে দেয়। ঘোনাবাড়ির রাজাকার মতিয়ার রহমান, হাসান আলী, ইস্রাফিল হোসেন, নূর মাহমুদ ও এছাহাক আলী এ গণহত্যায় সহযোগিতা করে। সেদিন গণহত্যায় শহীদ হন রামনাথ পাল, মোহননাথ পাল, শিবনাথ পাল, কানাইলাল পাল, সুরেশ চন্দ্র সাহা, উত্তম কুমার সাহা, নিরোধ কুমার সাহা, রাম মোহন দাস ও হরিপদ দাস। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড