You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে ঘাটাইল উপজেলা (টাঙ্গাইল) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে ঘাটাইল উপজেলা (টাঙ্গাইল)

ঘাটাইল উপজেলা (টাঙ্গাইল) ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত সমস্ত জাতীয় আন্দোলনে এ উপজেলার ছাত্র- জনতা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও তারা আওয়ামী লীগ-এর পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে তারা স্বাধিকার লাভের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক শাসক আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয় এবং তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তাদের এই ক্ষোভ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রূপ নেয়।
১৯৭১ সালের ১লা মার্চ জয় বাংলা বাহিনী গঠনের মধ্য দিয়ে ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্ব শুরু হয়। ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঐতিহাসিক ভাষণের পরদিন থেকে ঘাটাইল ঈদগাহ মাঠে জয় বাংলা বাহিনীর সদস্যদের ট্রেনিং শুরু হয়। ২৫০ জন সদস্যের এ বাহিনীর প্রশিক্ষক ছিলেন আবুল হোসেন, নূরুল হক, আবদুল গণি ও শামসুদ্দিন। ২৬শে মার্চ জাতীয় পরিষদ সদস্য শামসুর রহমান খান শাহজাহান ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য আবদুল বাসেত সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ঘাটাইল সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এ পরিষদের অন্য সদস্যরা হলেন- মোয়াজ্জেম হোসেন খান, মতিয়ুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান রুনু, আবদুর রশিদ, হাসান আলী, হবিবুর রহমান খান, আনসার আলী ফকির, আশরাফ গিরানী, আবদুল হামিদ, আজমল হোসেন, নজরুল ইসলাম খান সামু, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, সাইদুর রহমান খান মোহন প্রমুখ।
২৮শে মার্চ জয়দেবপুর দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্ট হেডকোয়ার্টার্সের মেজর কে এম সফিউল্লাহ, বীর উত্তম- বিদ্রোহ করেন এবং তাঁর অধীনস্থ বাঙালি সৈনিকদেরসহ সশস্ত্র অবস্থায় ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ঐদিন বিকেল ৪টার দিকে ঘাটাইলে পৌঁছলে ঘাটাইল সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ তাঁদের স্বাগত জানান। মেজর সফিউল্লাহ প্রায় ৪০ মিনিট ঘাটাইলে অবস্থান করেন। এর ফলে ঘাটাইলের ছাত্র-জনতা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উৎসাহ পায়। ৩১শে মার্চ টাঙ্গাইল হাই কমান্ডের উপদেষ্টা খন্দকার আসাদুজ্জামান ঘাটাইলের ছাত্রনেতা আবদুর রশিদ ও হাসান আলীর নিকট ১০টি রাইফেল পাঠান। রাইফেলগুলো পাওয়ায় ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি আরো গতিশীল হয়। ঘাটাইল ঈদগাহ মাঠ ছাড়াও কান্দুলিয়া ঈদগাহ মাঠ, গৌরাঙ্গী, বীরসিংহ, গালা প্রভৃতি স্থানে অস্থায়ীভাবে মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপিত হয়।
ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও কমান্ডাররা হলেন— শামসুর রহমান খান শাহজাহান এমএনএ (স্বাধীন বাংলা গণমুক্তি পরিষদের অন্যতম নেতা, মুজিবনগর সরকারের উত্তর-পূর্ব জোনের চেয়ারম্যান), আবদুল বাসেত সিদ্দিকী এমপিএ, হাবিবুর রহমান, বীর বিক্রম- (সাধুর গলগণ্ডা; কোম্পানি কমান্ডার, জাহাজমারা হাবিব নামে পরিচিত), খোরশেদ আলম তালুকদার, বীর প্রতীক- (বীর ঘাটাইল; কোম্পানি কমান্ডার), খসরু মিয়া, বীর প্রতীক- (রতনপুর; কোম্পানি কমান্ডার), ফজলুল হক, বীর প্রতীক (উপলদিয়া; কোম্পানি কমান্ডার), ইউনুস আলী তালুকদার (বীর ঘাটাইল; কোম্পানি কমান্ডার), হাবিবুল হক খান বেনু (গৌরাঙ্গী; কোম্পানি কমান্ডার), এন এ খান আজাদ (কান্দুলিয়া ; কোম্পানি কমান্ডার), রিয়াজউদ্দিন তালুকদার (দেওপাড়া; কোম্পানি কমান্ডার), কাজী জহুরুল হক চান মিয়া (ব্রাহ্মণশাসন; কোম্পানি কমান্ডার), হাফিজুল হক খান মিনু (গৌরাঙ্গী; কোম্পানি কমান্ডার), শাহজাহান আকন্দ (চকপাড়া; কোম্পানি কমান্ডার) প্রমুখ।
জুলাই মাসের প্রথম দিকে পাকবাহিনী ঘাটাইলে প্রবেশ করে এবং ঘাটাইল থানায় ক্যাম্প স্থাপন করে। পরবর্তীতে তারা ধলাপাড়া, দেওপাড়া ও সিংগুরিয়াতেও অস্থায়ী ক্যাম্প করে। তাদের সহায়তায় ডা. শওকত আলী ভূঁইয়া (ধলাপাড়া), জসিম উদ্দিন চৌধুরী (ধলাপাড়া), তায়েজ উদ্দিন (কাজলা), ফজলুর রহমান ভঙ্গু মিয়া (মোগলপাড়া), ইদ্রিস চৌধুরী (লোকেরপাড়া), আবদুল করিম তালুকদার (পাকুটিয়া), শামসুজ্জামান খান, প্রমুখের নেতৃত্বে গঠিত হয় শান্তি কমিটি -, রাজাকার- ও -আলবদর বাহিনী।
ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যেসব রাজাকার ও আলবদর হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে পাকবাহিনীকে সহযোগিতা করে, তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়রা হলো- নূরুল হক (রতনপুর), আবদুল মোতালেব (ঘাটাইল), আবদুল গণি (শাহপুর), হায়দার আলী (বেংরোয়া), মোতাহার আলী (ধোপাজানী), আবু বকর মৌলভী (নলমা), ইমান আলী (গৌরাঙ্গী), আনসার আলী (জামুরিয়া), মকবুল মুন্সি (পুংলি), আবদুর রহিম (ধোপাজানী), শাহজাহান চৌধুরী (লোকেরপাড়া), মওলানা শহিদুর রহমান (লোকেরপাড়া), আবদুস সালাম রাজী (খিলগাতী; আলবদর কমান্ডার) প্রমুখ।
পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঘাটাইল উপজেলায় ৪টি গণহত্যা চালায় আঠারদানা-পারশি গণহত্যা, হামিদপুর গণহত্যা-, চামুরিয়া-ভদ্রবাড়ি গণহত্যা এবং পাকুটিয়া গণহত্যা। হামিদপুরে ১৯ জন, আঠারদানা-পারশিতে ৭ জন, চামুরিয়া-ভদ্রবাড়িতে ৮ জন এবং পাকুটিয়ায় ৮ জন মানুষ গণহত্যার শিকার হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে নলমা, বড়মেধা, ধলাপাড়া, নিচনপুর, জামুরিয়া, কর্ণা, নজুমবাগ, গোকুলনগর ও পাড়া গ্রামের বিশ জনের অধিক নিরীহ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। নিহতদের কয়েকজন হলেন বামাচরণ পারশব শর্মা (পাকুটিয়া সৎসংঘ সেবাশ্রমের ঠাকুর), পাকুটিয়ার হাসেম আলী খান, নারায়ণ চন্দ্র পাল, রঙ্গরাণী পাল, কর্ণার ডা. মর্তুজ আলী খান প্রমুখ। গণহত্যা ছাড়াও আঠারদানা-পারশি গ্রামের বহু হিন্দু নারীকে নির্যাতন করা হয়।
পাকবাহিনী জুলাই মাসে ক্যাম্প স্থাপনের পর স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় হামিদপুর বাজার ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামের বহু ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘাটাইলে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কালিদাসপাড়া সেতু অপারেশন -, সাগরদিঘীর যুদ্ধ, গর্জনার যুদ্ধ – মাকড়াই যুদ্ধ, সিংগুরিয়ার যুদ্ধ- ধলাপাড়ার যুদ্ধ, দেওপাড়ার যুদ্ধ -, ব্রাহ্মণশাসনের যুদ্ধ ও গুণগ্রামের যুদ্ধ। কালিদাসপাড়া সেতু অপারেশন পরিচালিত হয় ২৭শে জুলাই ভোররাতে। এদিন কোম্পানি কমান্ডার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সেতুতে পাহারারত রাজাকারদের আক্রমণ করেন। এতে ১১ জন রাজাকার নিহত হয়। অপারেশন শেষে মুক্তিযোদ্ধারা ১৪টি রাইফেল ও ১০০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেন। সাগরদিঘীর যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৫ই আগস্ট। এ যুদ্ধে ১০ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত ও ১৪ জন আহত হয়। অপরদিকে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও ২০ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
গর্জনার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৪ই আগস্ট সকালে। – আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে এ-যুদ্ধে ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। মাকড়াই যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৬ই আগস্ট। কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে এ-যুদ্ধে ৩৪ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২৮ জন রাজাকার ধরা পড়ে। অবশিষ্ট পাকসেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি ফেলে যায়, যা মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
সিংগুরিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৮ই অক্টোবর সিংগুরিয়া- লোকেরপাড়া স্যার আবদুল হালিম গজনবী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে। যুদ্ধে পাকবাহিনী পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায় এবং বেশ কয়েকজন রাজাকার ধরা পড়ে। এদিন মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছালাম শহীদ হন।
ধলাপাড়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ২৮শে অক্টোবর। কোম্পানি কমান্ডার রিয়াজউদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা ধলাপাড়ার ক্যাম্প আক্রমণ করেন। প্রায় দেড়ঘণ্টা গুলি বিনিময়ের পর পাকবাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পটি দখল করেন।
দেওপাড়ায় ১৩ই নভেম্বর ও ১০ই ডিসেম্বর দুদিন যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে প্রথমদিন নেতৃত্ব দেন প্লাটুন কমান্ডার অলোক এবং দ্বিতীয় দিন কোম্পানি কমান্ডার রিয়াজউদ্দিন তালুকদার। দ্বিতীয় দিনের যুদ্ধে পাকবাহিনীর পরাজয় ঘটে এবং তারা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায়। তিনজন পাকসেনা ও ১৩ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।
ব্রাহ্মণশাসনের যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১০ই ডিসেম্বর। এতে নেতৃত্ব দেন কমান্ডার হাবিবুর রহমান। দু-দফায় সংঘটিত এ-যুদ্ধের প্রথম দফায় দুজন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও কয়েকজন আহত হয় এবং ২২ জন আত্মসমর্পণ করে। দ্বিতীয় দফার যুদ্ধ প্রতিকূলে বুঝতে পেরে মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণ করেন। এ-যুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
গুণগ্রামের যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১০ই ডিসেম্বর। কাদেরিয়া বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার মাসুদুল হক মাসুদের নেতৃত্বে সংঘটিত এ-যুদ্ধে ৫ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় এবং ১৮ জন আত্মসমর্পণ করে। অপরদিকে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ৫ জন আহত হন। ১০ই ডিসেম্বর ঘাটাইল উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- হাবিবুর রহমান, বীর বিক্রম- (পিতা মওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, সাধুর গলগণ্ডা), খোরশেদ আলম তালুকদার, বীর প্রতীক- (পিতা মনির হোসেন তালুকদার, বীর ঘাটাইল), মো. খসরু মিয়া, বীর প্রতীক- (পিতা রোকনউদ্দিন, রতনপুর), ও মো. ফজলুল হক, বীর প্রতীক- (পিতা মো. ওসমান গনি তালুকদার, উপলদিয়া)।
ঘাটাইল উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন— মানিক খান (পিতা সাদেক আলী খান, দত্তগ্রাম), হাতেম আলী (পিতা হাসান আলী, গৌরাঙ্গী), শাহজাহান আলী (পিতা সিরাজুল ইসলাম, রঘুনাথপুর), আনোয়ার হোসেন (পিতা জয়েন উদ্দিন, ব্রাহ্মণশাসন), পাঞ্জাব আলী (পিতা জুলু সরকার, গুপ্তবৃন্দাবন), আবুল হোসেন (পিতা বাহার মণ্ডল, সোলাকুড়া), আলী আকবর (পিতা জিয়াউল্লাহ, দত্তগ্রাম), আবদুস ছালাম (পিতা ময়েন উদ্দিন, খায়েরপাড়া), সিদ্দিক হোসেন (পিতা গঞ্জু মিয়া, চরপাড়া), মনসুর আলী (পিতা মুনুরুদ্দিন, শাহপুর), আবদুস সোবহান (পিতা জনাব আলী, ফুলমালির চালা), বজরত আলী (পিতা ইব্রাহীম মিয়া, ব্রাহ্মণশাসন), আবু হানিফ (পিতা মোশারফ আলী, বেণীমাধব), সুজাত আলী (পিতা ইউনুস আলী, দেওপাড়া), হযরত আলী (পিতা ইউনুস আলী, দেওপাড়া), আমির আলী (পিতা ইউনুস আলী, দেওপাড়া), দুলাল মিয়া (পিতা আবদুল আজিজ, দেওপাড়া), খোরশেদ আলী (পিতা আবদুল মান্নান, দেওপাড়া), অহেদ আলী (পিতা জব্বার আলী, দেওপাড়া), বজলুর রহমান (পিতা আবদুস সোবহান, উপলদিয়া), মনসুর রহমান (পিতা আমান আলী, কান্দুলিয়া উত্তরপাড়া), প্যারিমোহন আদিত্য (পিতা মুকুন্দ বিহারী আদিত্য, পাকুটিয়া), আবদুল কাদের (পিতা আশ্রব আলী, সাধুটি), আবদুল হামিদ (পিতা আবদুল মজিদ, গৌরাঙ্গী), দিলীপ কুমার রায় (পিতা সত্যেন্দ্র মোহন রায়, কর্ণা), রইছ উদ্দিন (পিতা ইনতাজ আলী, কুশারিয়া), মতিয়ার রহমান (পিতা ময়েন উদ্দিন, কর্ণা), আবদুল করিম (পিতা অজিত উল্লাহ সরদার, চান্দশী), দেলোয়ার হোসেন খান (পিতা আমানত আলী খান, লোকেরপাড়া), সিপাহি মির্জা মোহাম্মদ আলী (পিতা ওসমান বেগ, সাধুর গলগণ্ডা), সোহরাব আলী (পিতা খোরশেদ আলম, কালিয়া), আবদুল মজিদ মণ্ডল (পিতা ইনতাজ আলী মণ্ডল, কাঁশতলা), শামসুল হক (পিতা ইয়াকুব আলী, গৌরাঙ্গী), আবদুর রহমান (পিতা জমির উদ্দিন শেখ, দিগর), শাহজাহান (পিতা সিরাজুল হক, পাঁচটিকড়ী), সিপাহি আবুল হোসেন (পিতা রহিম উদ্দিন, ঘাটাইল), অধ্যাপক আবদুস সাত্তার (পিতা সেকান্দর আলী, মধ্যকর্ণা), নাজিম উদ্দিন (পিতা রহিম উদ্দিন, কৈডলা), আবদুর রাজ্জাক (পিতা হাসেম আলী, গৌরাঙ্গী), আবু সাঈদ আহম্মদ (পিতা হাজি যদু সরকার, গর্জনা), সিপাহি আবদুল আজিজ সিদ্দিকী (পিতা মফিজউদ্দিন সিদ্দিকী, দক্ষিণ কর্ণা), হেমন্ত কুমার কর (পিতা বসন্ত কুমার কর, হেলনাপাড়া গর্জনা), জাহাঙ্গীর হোসেন খান (পিতা মোয়াজ্জেম হোসেন খান, লোকেরপাড়া) এবং হাবিবুর রহমান তালুকদার (পিতা জয়েন উদ্দিন তালুকদার, বাগুনডালী)।
উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ঘাটাইল চৌরাস্তার কলেজ মোড়ে নির্মিত হয়েছে বিজয় ‘৭১ ভাস্কর্য, হামিদপুর গণহত্যার স্মৃতিফলক এবং মাকড়াই যুদ্ধের স্মৃতিফলক। তিনজন মুক্তিযোদ্ধার নামে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে

শহীদ ছালাম উচ্চ
বিদ্যালয় (খায়েরপাড়া), শহীদ চন্দন উচ্চ বিদ্যালয় (ধলাপাড়া) এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আজমল হোসেন প্রাথমিক বিদ্যালয় (খাগরাটা)। চারজন মুক্তিযোদ্ধার নামে চারটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে – বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার সড়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ গিরানী সড়ক, মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান বীর বিক্রম সড়ক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা খসরু মিয়া বীর প্রতীক সড়ক। এছাড়া রয়েছে শহীদ সালাহ্উদ্দিন সেনানিবাস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন তালুকদার তোরণ (লোকেরপাড়া)। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড