You dont have javascript enabled! Please enable it!

গোসাইলডাঙ্গা পেট্রোল পাম্প অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর)

গোসাইলডাঙ্গা পেট্রোল পাম্প অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালিত হয় ২৯শে মে। এদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ সরদার ও মোহাম্মদ শাহজাহান জি আর কে উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন পেট্রোল পাম্পে গ্রেনেড হামলা চালান। তখন চট্টগ্রাম শহর হানাদার বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। পেট্রোল পাম্পের পাহারায় ছিল ৪-৫ জন পাকিস্তানি সৈন্য। তারা পথচারীদের মধ্যে যাদের সন্দেহ হতো তাদের ধরে প্রকাশ্যে নির্যাতন করত। তাদের অত্যাচারের ভয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। পাকিস্তানি হানাদাররা নানা ভয়ভীতি, গুম, খুন, লুটপাট, নারীনির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও ধরপাকড়ের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই মানুষ আতঙ্কিত থাকত।
হানাদাররা পাড়া-মহল্লায় হানা দিয়ে যুবতি নারীদের ধরে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে গণধর্ষণ করত। তারা পথে-পথে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি ও ডান্ডি কার্ড চেক করত, কলেমা জিজ্ঞাসা করে ও কাপড় খুলে ধর্মীয় পরিচয় পরীক্ষা করত। এ খবর মুক্তিযোদ্ধাদের পানওয়ালাপাড়া সবুজবাগের ঘাঁটিতে (আব্দুল হাই সরদারের বাড়ি) পৌঁছে যায়। এমন নারকীয় পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধারা গোসাইল ডাঙ্গা পেট্রোল পাম্প অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ সরদার ও মোহাম্মদ শাহজাহান ২৯শে মে সন্ধ্যায় জি আর কে স্কুলের পাশ দিয়ে এসে কৌশলে শত্রুবাহিনীর সদস্যদের ওপর গ্রেনেড ছুঁড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। এ অপারেশন মানুষের মনে আশা ও সাহস জোগায়। এরপর থেকে হানাদারদের পক্ষ থেকে গোসাইলডাঙ্গা পেট্রোল পাম্পের পাহারা আরো জোরদার করা হলেও নির্যাতনের মাত্রা কমে আসে। [জামাল উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!