You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অধ্যাপক ও সমাজসেবী গৌরী আইয়ুব - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অধ্যাপক ও সমাজসেবী গৌরী আইয়ুব

গৌরী আইয়ুব (১৯৩১-১৯৯৮) ভারতের অধ্যাপক ও সমাজসেবী। তাঁর বিবাহপূর্ব নাম গৌরী দত্ত। তিনি ১৯৩১ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি বিহারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ধীরেন্দ্র মোহন দত্ত এবং মাতার নাম নিরুপমা দত্ত। তিনি ১৯৪৭ সালে বিহার রাজ্যব্যাপী অনুষ্ঠিত বার্ষিক পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ছাত্রাবস্থায় ছাত্র আন্দোলনে তাঁর সম্পৃক্ততার জন্য তিনি গ্রেফতার হন। তিনি দর্শনে স্নাতক (১৯৫২) এবং শিক্ষায় স্নাতকোত্তর (১৯৫৫) ডিগ্রি অর্জন করেন। শান্তিনিকেতনে অবস্থানকালে তিনি ৩ দিনব্যাপী সাহিত্য সম্মেলনের (২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩) আয়োজন করেন, যার ফলে বাঙালি লেখক ও কবিরা সংঘবদ্ধ হয়ে ভাষা শহীদ দিবস পালন করেন। ১৯৬৩ সালে শ্রী শিক্ষায়তন কলেজে যোগদান করার পর তিনি শিক্ষা বিভাগের প্রধান হিসেবে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে লেখা ছোটোগল্প, বঙ্গানুবাদ ও প্রবন্ধের জন্য এবং বাংলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিস্তার রোধে ভূমিকা পালন ও পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য তিনি সর্বমহলে সুপরিচিত ছিলেন।
১৯৭১ সালে গৌরী আইয়ুব শুধুমাত্র বাংলাদেশের অগণিত উদ্বাস্তুদের সহায়তাই করেননি, উপরন্তু সক্রিয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের জন্য আশ্রয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কলকাতার নিকট বাদু শহরে বাংলাদেশের এতিম শিশুদের জন্য খেলাঘর নামে একটি আশ্রয়স্থল স্থাপনের ব্যাপারে তিনি মৈত্রেয়ী দেবীকে সহায়তা প্রদান করেন, যেখানে অসহায় শিশুদের থাকার জায়গা ও শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। মৈত্রেয়ী দেবীর মৃত্যুর পর (১৯৯০) গৌরী আইয়ুব খেলাঘর পরিচালনার দায়িত্ব নেন এবং এখনো এটির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি ১৯৯৮ সালের ১৩ই জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৌরী আইয়ুব-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) ) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড