You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর বিক্রম গোলাম মোস্তফা খান - সংগ্রামের নোটবুক

বীর বিক্রম গোলাম মোস্তফা খান

গোলাম মোস্তফা খান, বীর বিক্রম (জন্ম ১৯৪৬) সুবেদার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৪৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কুটি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম পানজাতন আলী খান এবং মাতার নাম রাহেলা খাতুন।
গোলাম মোস্তফা খান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে নায়েক সুবেদার পদে চাকরি করতেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের মালিকোর্ট সামরিক হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ ও ২৫শে মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর গণহত্যা তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। দেশমাতৃকার টানে এপ্রিলের প্রথম দিকে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে ‘জেড’ ফোর্সের অধীনে ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যোগ দেন। জামালপুর, কোদালকাঠি, সিলেটের চা বাগানসহ বিভিন্ন স্থানে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। জামালপুর সীমান্তবর্তী কামালপুরে ছিল পাকিস্তানি সেনাদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। ৫ই জুন সহযোদ্ধাদের নিয়ে তিনি এ ঘাঁটিতে একটি বড় ধরনের আক্রমণ চালান। তখন তাঁর অবস্থান পাকিস্তানি সেনারা গোলন্দাজ বাহিনীকে জানিয়ে দেয়। গোলাম মোস্তফার সঙ্গে ছিল এসএমজি। হামাগুড়ি দিয়ে তিনি শত্রুঘাঁটির পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের নিকট চলে যান। তাঁর ছোড়া ব্রাশ ফায়ারে টাওয়ারের ওপর অবস্থানরত কয়েক পাকসেনা লুটিয়ে পড়ে। হঠাৎ শত্রুপক্ষের ছোড়া গুলিতে তিনি আহত হন। তাঁর বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধা শহীদ এবং অনেকে আহত হন। অবশেষে ৪ঠা ডিসেম্বর <মিত্রবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিবাহিনী এ ঘাঁটির পতন ঘটাতে সক্ষম হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সুবেদার গোলাম মোস্তফা খানের অসাধারণ সাহস ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করে। তাঁর স্ত্রীর নাম জ্যোস্না বেগম। এ দম্পতি ৫ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক-জননী। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড