You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক গোলাম মোস্তফা

গোলাম মোস্তফা, বীর প্রতীক (মৃত্যু ২০০৫) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর দেশের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রামপাছরা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম আবদুল রেজ্জাক ও মাতার নাম জমিলা বেগম। তাঁর স্ত্রীর নাম কোহিনূর বেগম।
১৯৭১ সালে গোলাম মোস্তফা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনা হিসেবে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করে প্রথমে প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে ভারতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে প্রথম প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশ নেন জামালপুর জেলার কামালপুরে। পরে তিনি আটগ্রাম-চারগ্রামসহ আরো অনেক স্থানে যুদ্ধ করেন।
২৭শে নভেম্বর ভোরবেলা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল গৌরীপুরে সুরমা নদীর উত্তর ও দক্ষিণ তীরে প্রতিরক্ষা অবস্থানে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আকস্মিক আক্রমণ করলে অগ্রবর্তী দলে থাকা আলফা ও ডেল্টা কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা সে আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকেন। প্রতিরোধকারীদের দলে গোলাম মোস্তফাও ছিলেন। এ-যুদ্ধে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং গোলাম মোস্তফাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা এক সময় পিছু হটতে বাধ্য হয়। যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর সারওয়ারসহ অনেক সেনা নিহত হয়। গৌরীপুর থেকে সিলেটের কানাইঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার এ-যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কানাইঘাট যুদ্ধ নামে পরিচিত।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুদ্ধাহত গোলাম মোস্তফা-কে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সফল সমাপ্তির পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং এক সময় ল্যান্স নায়েক পদে উন্নীত হন। তিনি ২০০৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। [এস এম মাহফুজুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!