গোয়ালপোতা গণহত্যা (তালা, সাতক্ষীরা)
গোয়ালপোতা গণহত্যা (তালা, সাতক্ষীরা) সংঘটিত হয় ৭ই মে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ শহীদ হন।
গোয়ালপোতা গ্রামের অবস্থান সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নে। এখানকার প্রায় সকল অধিবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত, যাদের অধিকাংশই মৎস্যজীবী এবং প্রান্তিক চাষী। ঘটনার দিন বিকেল, ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে হানাদার বাহিনীর এ নৃশংসতা।
হরিণখোলা এবং গোয়ালপোতা পাশাপাশি দুটি গ্রাম। গ্রামবাসীর অধিকাংশ হিন্দু ধর্মালম্বী হওয়ায় এ গ্রামটি হানাদার বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে গোয়ালপোতা গ্রামের কিছু ছাত্র সুবাস চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে স্বাধীনতার পক্ষে প্রচার চালান। শাল্যের রাজাকার- কমান্ডার গুলজার ওরফে গুলবাহারের মাধ্যমে হানাদার বাহিনী এ খবর জানতে পারে। রাজাকার গুলবাহার হানাদার বাহিনীকে পথ দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসে।
৭ই মে হানাদার বাহিনী হরিণখোলা গ্রামে গণহত্যা শেষে বিকেল ৪টার দিকে তারা গোয়ালপোতা গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। গোয়ালপোতা গ্রামে প্রবেশ করেই তারা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। গ্রামবাসীরা ভয়ে পাথরঘাটা খালের ঢালে আশ্রয় নেয়। হানাদাররা হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর শুরু করে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ। অবশিষ্ট গ্রামবাসী ভয়ে ঐ রাতেই ভারতে চলে যায়। এ গণহত্যায় বেশ কয়েকজন মানুষ শহীদ হন। দূর-দূরান্তের হওয়ায় সকলের পরিচয় জানা যায়নি। যাদের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন- সুরেন্দ্রনাথ ঢালী, সুরেশ ঢালী (৪০), সুখ চাঁদ সরকার (৪৫), হর চাঁদ সরকার (৫০), হাজেরা, জয়হরি সরকার (৪২), দুধলী গ্রামের ছাত্তার মেম্বর (৭০), শাকদাহ গ্রামের নিতাই মণ্ডল (২৫) এবং শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসা ভবানীপুর গ্রামের চতুর মণ্ডল (৩০)। [মাসুদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড