গোরকঘাটা দক্ষিণ হিন্দুপাড়া গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার)
গোরকঘাটা দক্ষিণ হিন্দুপাড়া গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার) সংঘটিত হয় ৬ই মে। এতে ২০-২৫ জন মানুষ গণহত্যার শিকার হন।
পাকিস্তানি বাহিনী গোরকঘাটা বাজার অপারেশন শেষ করে (৬ই মে) থানা শান্তি কমিটির সদস্য, রাজাকার ও আলবদরদের নিয়ে বৈঠক করে। দোসরদের পরামর্শমতে হানাদাররা গোরকঘাটা ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার দক্ষিণ হিন্দুপাড়া, ঠাকুরতলা, পুটিবিলা, পালপাড়া, আদিনাথ মন্দির ও বড় মহেশখালী হিন্দুপাড়ায় হামলা চালায়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা এ-সময় গোরকঘাটা দক্ষিণ হিন্দুপাড়ায় আক্রমণ চালিয়ে অনেকগুলো – বাড়িঘর ও মন্দিরে লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগ করে। রাজাকাররা মাতব্বর পরিবারের ৯ জনসহ কয়েকজনকে ধরে এনে পাকিস্তানি বাহিনীর নিকট সোপর্দ করে। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করলে তাদের মধ্যে অনেকে শহীদ হন। আক্রমণকালে বৃদ্ধ বলে কোথাও যেতে না পারায় গোরস্থান পাড়ার দুই সহোদর অখিল চন্দ্র দে (৬৫) ও রসিক চন্দ্র দে (৬০) ঘরের মধ্যে শহীদ হন। গুলিতে কেউ-কেউ নিহত না হলেও অন্যান্য মৃতদের সঙ্গে তাদের জীবন্ত কবর দেয়ার ঘটনাও এখানে ঘটে। গোরকঘাটা দক্ষিণ হিন্দুপাড়া গণহত্যায় ২০-২৫ জন মানুষ শহীদ হন। তাদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন— ফণীন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য (পিতা শশাংক মোহন ভট্টাচার্য), আদিনাথ ভট্টাচার্য (পিতা ফণীন্দ্ৰ নাথ ভট্টাচার্য), শরৎ চন্দ্র দে (পিতা প্রতাপ চন্দ্র দে), সুধীর চন্দ্র দে (পিতা প্রতাপ চন্দ্ৰ দে), হরিপদ দে (পিতা যাত্রা মোহন দে), বাঁশি রাম দে (পিতা যাত্রা মোহন দে), ননীগোপাল দে (পিতা যাত্রা মোহন দে), কালু রাম দে (পিতা জয় দে), মণীন্দ্র লাল শীল (পিতা পূর্ণ চন্দ্র শীল), মণীন্দ্র লাল দে (পিতা পূর্ণ চন্দ্র দে), ললিত চন্দ্ৰ দে (পিতা দেলা রাম দে) ও মণীন্দ্র চন্দ্র দে (পিতা ললিত চন্দ্ৰ দে)। শহীদদের অনেককে নবীন মাতব্বর বাড়ির পুকুরের উত্তরপাড়ে গণকবরে সমাহিত করা হয়। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড