You dont have javascript enabled! Please enable it!

গোরকঘাটা বাজার গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার)

গোরকঘাটা বাজার গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার) সংঘটিত হয় ৬ই মে। এ গণহত্যায় অর্ধশতাধিক মানুষ শহীদ হন।
মহেশখালী উপজেলার প্রধান কেন্দ্র গোরকঘাটা বাজার। মূলত হিন্দু ও রাখাইন জনগোষ্ঠী এখানে বসবাস করত। ৬ই মে পাকিস্তানি বাহিনী নৌযান থেকে মহেশখালী ঘাটে নেমেই প্রথমে দক্ষিণ রাখাইন পাড়ার বৌদ্ধ মন্দিরটি জ্বালিয়ে দেয়। এরপর তারা গোরকঘাটার হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় আক্রমণ চালায়। তারা দোকানের তৃতীয় তলায় পূজায় মগ্ন থাকা অবস্থায় গোরকঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী বিমল কান্তি চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে। গোরকঘাটা বাজারের চায়ের দোকানের মালিক হিমাংশু বিশ্বাস ওরফে সাধন চন্দ্র বিশ্বাস জীবন রক্ষার জন্য মুসলিম হয়েছিল। ভাঙ্গা-ভাঙ্গা উর্দুও শিখেছিল। পাকিস্তানি বাহিনীর ভয়ে নিয়মিত মাথায় টুপি পড়ত, কলেমাও শিখেছিল। কিন্তু তাতেও সে রেহাই পায়নি। পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর মৌলানা অলী আহাম্মদ হানাদারদের ডেকে এনে বলে ‘ইয়ে মালাউন হে’। এ কথা বলার সঙ্গে-সঙ্গে হানাদাররা সাধন চন্দ্র বিশ্বাসকে গুলি করে হত্যা করে। তারা বিমল চৌধুরীর কর্মচারী চিত্ত বিশ্বাসকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই গুলি করে হত্যা করে। মৌলানা অলী আহাম্মদ নিজেই চাকু দিয়ে কমল সাধুকে হত্যা করে। গোরকঘাটা গ্রামের মোহাম্মদ আলীকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালানো হলেও ঘটনাক্রমে তিনি বেঁচে যান। এ গণহত্যায় বাজারের ১২ জন ব্যবসায়ীসহ অর্ধশতাধিক মানুষ শহীদ হন। ১২ জন ব্যবসায়ী হলেন— গোলাম বারী (পিতা বাঁচা মিয়া), বিমল কান্তি চৌধুরী (পিতা জ্ঞানদা রঞ্জন চৌধুরী), সুধাংশু বিশ্বাস (প্রযত্নে ঋষি চৌধুরী), সাধন চন্দ্র বিশ্বাস (পিতা হিমাংশু চন্দ্র বিশ্বাস), হিমাংশু চন্দ্র বিশ্বাস (পিতা রেবতি বিশ্বাস), কমল সাধু (পিতা পরশু রাম দে), উপেন্দ্রলাল চৌধুরী (পিতা ষষ্টিচরণ চৌধুরী, চইক্যা), অতুল চন্দ্র পাল (পিতা গুন্তী মোহন), হারাধন পাল (পিতা অতুল পাল), অমূল্য চরণ দে (পিতা মহেন্দ্র লাল দে), রমণী রাম সরকার (পিতা বিশ্বম্ভর সরকার) ও যোগেশ লাল চক্রবর্তী (পিতা পুনজ বিহারী চক্রবর্তী)। [জগন্নাথ বড়ুয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!