You dont have javascript enabled! Please enable it!

গোমনাতি চৌধুরীপাড়া বধ্যভূমি (ডোমার, নীলফামারী)

গোমনাতি চৌধুরীপাড়া বধ্যভূমি (ডোমার, নীলফামারী) নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার গোমনাতি চৌরাস্তার পাশে বাজার সংলগ্ন চৌধুরীপাড়ায় অবস্থিত। ২৭শে মার্চ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শামছুল হক প্রামাণিকের পরামর্শে মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন বাঙালি ইপিআর সদস্যদের সহায়তায় কেতকীবাড়ি ইপিআর ক্যাম্প আক্রমণ করলে একজন পাকিস্তানি সুবেদারসহ পাঁচজন সৈনিক ও কয়েকজন বিহারি নিহত হয়। স্থানীয় জনগণ তাদের লাশ মাটিতে পুঁতে রাখে। এপ্রিল মাসের শেষ দিকে পাকবাহিনী চিলাহাটিতে ক্যাম্প স্থাপনের পর এ ঘটনা জানতে পেরে কেতকীবাড়ি ইপিআর ক্যাম্প পরিদর্শনে যায়। ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ফেরার পথে তারা গোমনাতি বাজারে ঢুকে নিরীহ বাঙালিদের ওপর এলোপাতাড়িভাবে গুলি করে। এতে শহীদ হন শিক্ষক রাজা মিয়া, ঠাটারী দাইজু, বুড়া, মোশারফ মাস্টারসহ অনেকে।
২রা মে গোমনাতি চৌধুরীপাড়া মোড়ে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে এবং তাদের বর্বর হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচার জন্য এক মহিলা তার ৬ মাসের শিশু কন্যাকে নিয়ে পুকুরে ভাসমান কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে থাকলে ঠাণ্ডায় শিশুটি মারা যায়।
গোমনাতি বধ্যভূমিতে যেসব শহীদের পরিচয় পাওয়া যায় তারা হলেন— গোমনাতির হবিবর রহমান (পিতা ইব্রাহীম চৌধুরী), মোশারফ হোসেন (পিতা ইব্রাহীম চৌধুরী), শা আ নূরনবী চৌধুরী রাজা (পিতা একরাম হোসেন), জয়েন উদ্দিন দাইজু (পিতা স্বরতুল্লাহ), থৈলু মামুদ (বামুনিয়া), আছদ্দিন মামুদ (পিতা ফকুন্দু মামুদ), বড়বুড়া (পিতা কলিমদ্দিন), কদরতউল্লাহ্ (পিতা বাচ্চা), কুদ্দুছ (পিতা বাচ্চা), আমর উদ্দিন (পিতা সেরামুদ্দিন), বাচ্চু (পিতা আ. জব্বর কান্দু), ইসমাইল হোসেন, লুৎফর রহমান, সহির উদ্দিনের নাবালক পুত্র আব্দুল কাদের, প্রমুখ। এছাড়াও এক শিশুকন্যা শহীদ হয়। এদের স্মৃতি রক্ষার্থে এখানে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
পাকবাহিনীকে সহায়তাদানকারী স্থানীয় রাজাকার-রা হলো— গোমনাতি ও দক্ষিণ গোমনাতির হাফিজুর রহমান (পিতা বসির উদ্দিন), মতিয়ার রহমান (পিতা মহির উদ্দিন), সামছুল হক (পিতা কাসিম উদ্দিন), সামছুল হক (পিতা নাঈম উদ্দিন), অহির উদ্দিন (পিতা ময়েজ উদ্দিন), আব্বাস আলী (পিতা পাথারু মামুদ), আব্দুল বেলাল (পিতা হামির উদ্দিন), আকবর আলী (পিতা হোসেন আলী), মোজাম্মেল হক (পিতা আব্দুল করিম), মোহাম্মদ আলী (পিতা বাহার উদ্দিন), বাছা মিয়া (পিতা আলিম উদ্দিন), ঈসমাইল হোসেন (পিতা ইসহার উদ্দিন), ময়েজ উদ্দিন (পিতা পাগুড়া মামুদ), লুৎফর রহমান (পিতা মাদার উদ্দিন), ওজির উদ্দিন (পিতা হারিম উদ্দিন) প্রমুখ। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!