You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক গুল মোহাম্মদ ভূঁইয়া

গুল মোহাম্মদ ভূঁইয়া, বীর প্রতীক (১৯৪৮-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৮ সালে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম একাব্বর আলী ভূঁইয়া এবং মাতার নাম মোছা. সাহেরা খাতুন। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। তিনি তেবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ বাহিনীতে যোগ দেন। সফলভাবে প্রশিক্ষণ সমাপ্তির পর তাঁকে দিনাজপুরে ৯ নম্বর উইং-এ পদায়ন করা হয়। স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত তরুণ ইপিআর সদস্য গুল মোহাম্মদ ভূঁইয়া ছিলেন অত্যন্ত সাহসী। ২৮শে মার্চ রাতে সুবেদার হাফিজের নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে উইং-এ কর্মরত সকল অবাঙালি অফিসার ও সৈনিককে হত্যা করে তাঁরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ২৯শে এপ্রিল ঠাকুরগাঁও ইপিআর হেডকোয়ার্টার্স শত্রুমুক্ত করার যুদ্ধে তিনি বীরত্বের সঙ্গে অংশ নেন। তিনি ভূষির বন্দর, দশমাইল, ভাতগাঁও প্রভৃতি যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখেন। বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মার খাওয়ার পর পাকবাহিনী সাঁজোয়া ও গোলন্দাজ বাহিনীর সাহায্যে ভাতগাঁওয়ে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। পাকসেনারা কান্তজীর মন্দিরের দুদিক দিয়ে মুক্তিবাহিনীকে আক্রমণ করে। শত্রুবাহিনীর ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়ে যায় গুল মোহাম্মদ ভূঁইয়ার দল। এমতাবস্থায়ও তাঁর দল যুদ্ধ চালাতে থাকে। সুনির্দিষ্ট টার্গেটে গুলি করে তিনি একে- একে ২৫-৩০ জন শত্রুসেনাকে হতাহত করতে সক্ষম হন। সহযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে সরে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে শত্রুবাহিনীর গুলিতে তিনি শহীদ হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান ও আত্মোৎসর্গ করায় বাংলাদেশ সরকার শহীদ সিপাহি গুল মোহাম্মদ ভূঁইয়াকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করেন। [শফিউদ্দিন তালুকদার

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!