গোছাপাড়া গণহত্যা (চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ)
গোছাপাড়া গণহত্যা (চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৮ই মে। এতে ১০ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। চুনারুঘাট থানা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোটিমার দক্ষিণে চুনারুঘাট-বাল্লা সড়কের পাশে আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে গোছাপাড়া গ্রামের অবস্থান। আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটি-র চুনারুঘাট থানার সদস্য- সচিব আবুল হাশিম, ইউপি সচিব কবির মিয়া ও পাকসেনাদের দোসর আব্দুর রশিদ তালুকদার নামে এক ব্যক্তির ইশারায় পাকসেনারা এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। গ্রামে প্রবেশ করে প্রথমেই তারা গোছাপাড়া গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার কারণে তাঁর পিতা আব্দুর রশিদ, চাচা রৌশন মিয়া (উভয়ের পিতা আবাস উল্লা, গোছাপাড়া, আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন)-কে নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে। তাদের হত্যার পর পার্শ্ববর্তী হিন্দুপাড়ায় আক্রমণ করে তারা গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নারীনির্যাতন করে। গোছাপাড়া গ্রাম গণহত্যায় শহীদ গ্রামবাসীরা হলেন- বিপিন পাল, হরেন্দ্র পাল, ব্রজেন্দ্র পাল, সুরেন্দ্র ভট্টাচার্য, অক্ষয় কুমার শুক্লবৈদ্য, যতীন্দ্র শুক্লবৈদ্য, রাখাল শুক্লবৈদ্য, টেনু শুক্লবৈদ্যসহ কয়েকজন। পাকবাহিনী এদের গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে অর্ধমৃত করে বনে আগুন ধরিয়ে তাতে নিক্ষেপ করে হত্যা করে। গণহত্যার পর তারা পালবাড়ির দুজন গৃহবধূ-কে ধরে নিয়ে যায় এবং তাদেরকে ৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা তাদের হেফাজতে রেখে দৈহিক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। [মিলন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড