You dont have javascript enabled! Please enable it!

গিরাইল গণহত্যা (কাহালু, বগুড়া)

গিরাইল গণহত্যা (কাহালু, বগুড়া) সংঘটিত হয় ৭ই মে। এতে ২০ জনের অধিক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়।
বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলা সদরের একটি গ্রামের নাম গিরাইল। এ গ্রামের সকল বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এটি কাহালু রেলস্টেশনের উত্তর পাশে অবস্থিত। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসর বিহারি সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় এখানে গণহত্যা সংঘটিত করে। বিহারি সম্প্রদায়ের মানুষদের স্থানীয় বাঙালি বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর ক্ষোভ ছিল। এ ক্ষোভ থেকে তারা পাকিস্তানি বাহিনীকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর লেলিয়ে দেয়। কাহালু পৌরসভা থেকে পাকিস্তানি বাহিনী ও বিহারিদের একটি দল ৭ই মে দুপুরবেলা গিরাইল গ্রামে হানা দেয়। গ্রামে প্রবেশ করেই তারা গুলি বর্ষণ করতে থাকে। গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে গ্রামের লোকজন দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা গ্রামের ঘরে-ঘরে হানা দিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। তারা যাদের পেয়েছে তাদেরই ধরে গিরাইল শ্রী শ্রী রাম গোবিন্দ মন্দিরের সামনে নিয়ে আসে। সেখানে পাকিস্তানি বাহিনী গিরাইল গ্রামের ২০ জনের বেশি অধিবাসীকে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। যাদের হত্যা করা হয়, তাদের মধ্যে ১৮ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- যাদব চন্দ্ৰ সরকার, যোগেশ চন্দ্র সরকার, চাঁন নাথ সরকার, কনক চন্দ্র সরকার, জগন্নাথ সরকার, পুকুরাম সরকার, তরণী নাথ সরকার, হারান সরকার, পেমা চন্দ্র, নারায়ণ চন্দ্র, ঝন্টু চন্দ্র, রুহিনাথ চন্দ্র, চান্দ চন্দ্র, রমাকান্ত চন্দ্র, ফতু চন্দ্ৰ, তিলক চাঁন, কর্ণধর ও তারা চন্দ্র। গণহত্যার পর পাকিস্তানি সৈন্য ও -রাজাকার-রা বাড়িঘরে হানা দিয়ে নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং বেশকিছু নারীকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। হানাদাররা চলে যাওয়ার পর আতঙ্কিত গ্রামবাসী গণহত্যায় নিহতদের মৃতদেহগুলো পার্শ্ববর্তী খাড়ির মধ্যে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!