গিলাপুরার টেক যুদ্ধ (কাপাসিয়া, গাজীপুর)
গিলাপুরার টেক যুদ্ধ (কাপাসিয়া, গাজীপুর) ৪ঠা সেপ্টেম্বর সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এ-যুদ্ধে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। গিলাপুরার টেক কাপাসিয়া উপজেলা সদর থেকে ২ কিমি উত্তরে তরগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। কাপাসিয়া-টোক রাস্তা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখানে স্থাপিত হওয়ায় এটি বর্তমানে শহরে রূপ নিয়েছে। টোক ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী কাপাসিয়া-টোক সড়ক গিলাপুরা টেকের ওপর দিয়ে গেছে। এ সড়কটি রায়েদ, বারিষাব হয়ে টোক ইউনিয়নের সঙ্গে মিশেছে। একটি গুরুত্বপুর্ণ সড়ক হিসেবে পাকিস্তানি সৈন্যরা এ কাঁচা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করত।
৪ঠা সেপ্টেম্বর সকালবেলা মুক্তিযোদ্ধা মিন্টু উবাদুল্লাহ কাপাসিয়া নদীতে পাকিস্তানি গানবোটের আগমন লক্ষ করেন। হানাদার বাহিনী গানবোটের সাহায্যে তরগাঁও গ্রামের দিকে আসতে পারে এ সংবাদের ভিত্তিতে কফিল উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে (তরগাঁও) অবস্থানরত বিএলএফ কমান্ডার ডা. সিরাজুল হক, শামসুউদ্দিন খান, আব্দুস সামাদ মোড়ল, জয়নাল আবেদীন, মিন্টু উবায়দুল্লাহ, আনোয়ার হোসেন মিন্টু, শ্রীপুর উপজেলার বরমীর ইউনুস এবং আফসার তালুকদার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গিলাপুরার টেকে আসেন। স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি সৈন্যরা নদী পার হচ্ছে জেনে মুক্তিযোদ্ধারা টোক-কাপাসিয়া সড়কের গিলাপুরার টেকের ঝোপের আড়ালে এম্বুশ নেন। ডা. সিরাজুল হক এ অপারেশনে স্কাউটের দায়িত্ব পালন করেন। মিন্টু এলএমজি নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য একটি ভারী অস্ত্র নিয়ে শামসুউদ্দিন খান পজিশন নেন। তাঁকে এলএমজি-র ম্যাগাজিন বিষয়ে সহায়তা করেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ মোড়ল।
মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ১০টার দিকে হানাদারদের ওপর আক্রমণ চালান। আকস্মিক আক্রমণে হানাদাররা গুলি ছুড়তে-ছুড়তে পিছু হটে এবং কাপাসিয়ার দিকে পালিয়ে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টার এ-যুদ্ধে বেশ কয়েজন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ আহত হন। [মুহম্মদ শহীদুল্লাহ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড