You dont have javascript enabled! Please enable it!

গাঁওকান্দিয়া গণহত্যা (দুর্গাপুর, নেত্রকোনা)

গাঁওকান্দিয়া গণহত্যা (দুর্গাপুর, নেত্রকোনা) সংঘটিত হয় ৬ই মে। এদিন পাকবাহিনী গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এ গণহত্যা এলাকার মুক্তিযুদ্ধে একটি লোমহর্ষক ঘটনা হিসেবে পরিচিত।
দুর্গাপুর থানা এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দালালদের সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজার নামে বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করত। সে-সময় বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারীদের বিরিশিরি ক্যাম্পে ধরে এনে তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাত। ৫ই মে বিরিশিরি ক্যাম্প থেকে ২ জন পাকসেনা কয়েকজন রাজাকার- ও দালাল নিয়ে দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া গ্রামে মহিলাদের খোঁজে প্রবেশ করে। তাদের খারাপ উদ্দেশ্য টের পেয়ে এলাকার নারীরা নিজেদের রক্ষার জন্য তালে হোসেন ওরফে ছোটুনির বাড়িতে আশ্রয় নেন। পাকসেনারা সেখানে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে ঘরে আশ্রয় নেয়া নারী ও এলাকাবাসী ২ পাকসেনাকে আটক করে। ক্ষুব্ধ জনতার আক্রমণে তারা নিহত হয়। এলাকার ডেন্ডু মিয়া, খালেক, তোতা মিয়া, ছোটুনি ও তাঁর স্ত্রী মোগলের নেছা, মজিদ, সুরজ আলী, মতিউর ও একিন আলী পাকসেনাদের বিরুদ্ধে এ প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এ সংবাদ বিরিশিরি ক্যাম্পে পৌঁছলে ৬ই মে শতাধিক পাকসেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রাম ঘেরাও করে। তারা অর্ধশতাধিক মানুষকে ধরে এনে গ্রামের ইউনুছ আলী মাস্টারের বাড়ির একটি ঘরে আটক করে প্রথমে ব্রাশ ফায়ার ও পরে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে তাদের হত্যা করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হাসান আলী মাস্টারের ঘরে ২১টি মাথার খুলি ও কিছু হাড়গোড় পাওয়া যায়। আশপাশের গ্রামে অনুসন্ধান চালিয়ে ৯ জন শহীদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— মেছের আলী (গাঁওকান্দিয়া), ওসমান আলী (গাঁওকান্দিয়া), জ্যা বক্স (চৈতাটি), নূর মামুদ (নলজোড়া), আবদুস সাত্তার (জাগীরপাড়া), জালো শেখ (জাগীরপাড়া), ইদু মিয়া (জাগীরপাড়া), তাহের আলী (জাগীরপাড়া) ও ইদ্রিস আলী (জাগীরপাড়া)। [জুলফিকার আলী শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!