You dont have javascript enabled! Please enable it!

গলাচিপা থানা দখল যুদ্ধ (গলাচিপা, পটুয়াখালী)

গলাচিপা থানা দখল যুদ্ধ (গলাচিপা, পটুয়াখালী) সংঘটিত হয় নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে দুবার। দুবারই মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযান ব্যর্থ হয়। পরে ১৮ই নভেম্বরের যুদ্ধে গলাচিপা থানা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। এ-যুদ্ধ পানপট্টি যুদ্ধ— নামে পরিচিত।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে গলাচিপা থানা অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা গলাচিপা থানাকে তাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করত, যদিও তারা এখানে স্থায়ীভাবে অবস্থান করেনি। শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার-রা গোপনে থানায় এসে পাকিস্তানি পুলিশের সঙ্গে মিটিং করত এবং অপারেশনের পরিকল্পনা করত। এখানে তারা একটি বাঙ্কারও তৈরি করেছিল, যে-কারণে থানা দখলে নেয়া মুক্তিবাহিনীর জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়ে। গলাচিপা থানা দখলের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বদানে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কে এম নুরুল হুদা (বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার) ও সরদার জাহাঙ্গীর কবির। মুক্তিবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁরা অক্টোবর মাসের শেষদিকে গলাচিপায় প্রবেশ করেন এবং থানা দখলের প্রস্তুতি নেন। থানা দখলের অভিযানে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন- হাবিবুর রহমান শওকত, মোহাম্মদ শাহজাহান, খোকন হাওলাদার, গোলাম মোস্তফা টিটো, মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান রানা, নাজমুল হুদা সালেক, মুকুল বিশ্বাস, সাজ্জাদ, নুরুল ইসলাম, কামাল পারভেজ, রেজাউল করিম বিশ্বাস, আবুল কালাম ইসা, নুরুল ইসলাম ধলা, এম এ রব প্রমুখ। নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে পরপর দুদিন থানা দখল করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ব্যর্থ হন। কিন্তু তাঁরা হাল না ছেড়ে পরবর্তী আক্রমণের জন্য যখন আরো সংগঠিত হচ্ছিলেন, তখন ঘটে পানপট্টি যুদ্ধ। ১৮ই নভেম্বর সংঘটিত পানপট্টি যুদ্ধ ছিল গলাচিপা থানার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। এ-যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর পরাজয় ঘটে এবং গলাচিপা থানা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। [এম এ হালিম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!