গল্লাক যুদ্ধ (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর)
গল্লাক যুদ্ধ (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় ২০শে জুলাই। এতে ৭-৮ জন পাকসেনা নিহত ও ১০-১২ জন আহত হয়।
খাজুরিয়া যুদ্ধ-এর দিন (২০শে জুলাই) যে-দুটি প্লাটুন বি এম কলিমউল্যা ভূঁইয়া ও জহিরুল হক পাঠানের নেতৃত্বে গল্লাক বাজার, বাসারা এবং ওয়াপদা রাস্তায় রাখা হয়েছিল, সে-দুটি প্লাটুনের ১নং প্লাটুনের কমান্ডার ছিলেন সুবেদার রব এবং ৩নং প্লাটুনের কমান্ডার ছিলেন সুবেদার নিরাজুল ইসলাম। খাজুরিয়ায় যুদ্ধরত প্লাটুনকে নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকতে বলে প্রায় ২৪ কিমি পথ অতিক্রম করে নিজ লোকদের অবস্থা জেনে এবং তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে কলিমউল্যা ভূঁইয়া ও জহিরুল হক পাঠান গল্লাক ও বাসারা ওয়াপদা রাস্তায় ফিরে আসেন। পাঠান এসে দেখেন ১নং প্লাটুন কমান্ডার সুবেদার আর হক (মতলব) পজিশনে নেই। এটি পাঠানের যুদ্ধ পরিকল্পনার পরিপন্থী ছিল। পাঠান গল্পাক বাজারে এসে সবাইকে কড়া নির্দেশ দেন নিজ-নিজ অবস্থানে যাবার জন্য। ক্লান্ত শরীর, উত্তেজিত মন, এদিকে পাকিস্তানি বাহিনী প্রায় কাছে চলে এসেছে।
জহিরুল হক পাঠান এবং কলিমউল্যা ভূঁইয়া গোয়েন্দাদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের তিন দিক থেকে আক্রমণ করবে। পাকিস্তান বাহিনী লঞ্চে করে প্রথম মুন্সিরহাটে এবং সেখান থেকে পায়ে হেঁটে আসে। তারা ওয়াপদা বাঁধ অতিক্রম করে মুক্তিযোদ্ধাদের টার্গেটের মধ্যে এলে পাঠান গ্রুপ বাম পাশ থেকে আক্রমণ করে এবং এর ১০ মিনিট পর ভূঁইয়ার গ্রুপ ডান পাশ থেকে আক্রমণ করে। উভয় পক্ষে প্রায় ২ ঘণ্টা প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এতে ৭-৮ জন পাকসেনা নিহত ও ১০-১২ জন আহত হয়। বাকি পাকসেনারা কভারিং ফায়ার করে নিহতদের লাশ ও আহতদের নিয়ে দ্রুত হাজিগঞ্জ চলে যায়। [দেলোয়ার হোসেন খান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড