বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক সেনা কর্মকর্তা গন্ধর্ব সিং নাগরা
গন্ধর্ব সিং নাগরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক সেনা কর্মকর্তা। ১৯৭১ সালে মেজর জেনারেল গন্ধর্ব সিং নাগরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২ মাউন্টেন ডিভিশনের অধিনায়ক ছিলেন। ডিভিশনটি আসাম রাজ্যের চীন সীমান্তে মোতায়েন ছিল।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতীয় মিত্রবাহিনী-র ১০১ কমিউনিকেশন জোনের অধিনায়ক জেনারেল গুরবক্স সিং গিল কামালপুর বিওপি মুক্তকরণ অভিযানের সময় মাইন বিস্ফোরণে আহত হন। এ কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের নির্দেশে ৫ই ডিসেম্বর ১০১ কমিউনিকেশন জোনের অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান মেজর জেনারেল গন্ধর্ব সিং নাগরা। তিনি তাঁর অধীনস্থ ৯৫ ব্রিগেড গ্রুপ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কামালপুর, বকশীগঞ্জ, জামালপুর ও টাঙ্গাইল শত্রুমুক্ত করেন। ১৫ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার মিরপুর পুলের কাছে পৌছেন। তিনি ১৬ই ডিসেম্বর সকাল ১১টায়
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অধিনায়ক লে. জেনারেল এ এ কে নিয়াজীকে আত্মসমর্পণের জন্য পত্র প্রেরণ করেন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর অল্পসংখ্যক সৈন্য ও অফিসারকে নিয়ে ঢাকা সেনানিবাসে জেনারেল নিয়াজীর সদর দপ্তরে প্রবেশ করে নিয়াজীকে আত্মসমর্পণ করতে রাজি করান। জেনারেল নাগরা ভারতীয় সেনাবাহিনী ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল নিয়ে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় অধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা-কে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
মুক্তিযুদ্ধে বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১২ সালের ১৫ই ডিসেম্বর মেজর জেনারেল (অব.) গন্ধর্ব সিং নাগরা-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড