You dont have javascript enabled! Please enable it!

খোলাহাটি গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর)

খোলাহাটি গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় ৮ই এপ্রিল, ২২শে এপ্রিল ও ১৫ই মে তিন দফায়। সবচেয়ে বড় গণহত্যা সংঘটিত হয় ৮ই এপ্রিল। এদিন ৩ শতাধিক মানুষ শহীদ হন।
দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার একটি রেল স্টেশনের নাম খোলাহাটি। রেল স্টেশনের কারণে এর আশপাশের এলাকা সাধারণভাবে খোলাহাটি নামেই পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু এলাকাটি স্থানীয়ভাবে আলাদা আলাদা পাড়া ও নামে বিভক্ত। এসব পাড়ার মধ্যে আছে রামপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া, দোলাপাড়া, বালাপাড়া, পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বাঙালিপাড়া, ঝাকুড়াপাড়া, ফকিরপাড়া ইত্যাদি। খোলাহাটির নিকটবর্তী বদরগঞ্জে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন সময়ে বাঙালি নিধনের অপারেশন পরিচালনা করত। এসব অপারেশনে স্থানীয় বিহারি ও রাজাকার-রা সহযোগিতা করত। তারা ৮ই এপ্রিল, ২২শে এপ্রিল ও ১৫ই মে ৩ দফায় খোলাহাটিতে গণহত্যা সংঘটিত করে। সবচেয়ে বড় গণহত্যা সংঘটিত হয় ৮ই এপ্রিল। এদিন বিকেলে বদরগঞ্জ থেকে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল ও বাচ্চা খানের নেতৃত্বে বিহারিদের একটি দল যৌথভাবে খোলাহাটির হাজীপুরে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন চালায়। এ গণহত্যায় ৩ শতাধিক মানুষ শহীদ হন। খোলাহাটিতে বিভিন্ন সময়ে গণহত্যায় শহীদ কয়েকজন হলেন- টুনিয়া (৩২) (পিতা সরে মোহাম্মদ, ফকিরপাড়া, পলাশবাড়ি), কালু (৩০) (ঝাকুড়াপাড়া), আব্দুর রেজ্জাক (পিতা মো. সোবহানউদ্দিন, ফকিরপাড়া, পলাশবাড়ি), অমেশ হক প্রামাণিক (পিতা আলিবউদ্দিন প্রামাণিক, ফকিরপাড়া, পলাশবাড়ি), বুলবুল সর্দার (৪৪) (পিতা দেলা সর্দার, বাঙালিপুর, পলাশবাড়ি), সৈয়দুল ইসলাম (৩৬) (পিতা শাহাদ প্রামাণিক, বাঙালিপুর, পলাশবাড়ি), শমসাল ইসলাম (৩৮) (পিতা শাহাদ প্রামাণিক, বাঙালিপুর, পলাশবাড়ি), মুসলিমউদ্দিন (পিতা ইদ্রিস আলী, দোলাপাড়া, রামপুর), মোজাম্মেল হক মোজা (পিতা আকপার হাজী, নয়াপাড়া, রামপুর) প্রমুখ। শহীদদের স্মরণে খোলাহাটিতে কোনো স্মৃতিসৌধ নেই। নিকটবর্তী বদরগঞ্জের ঝারুয়ার বিলে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে (দ্রষ্টব্য ঝারুয়ার বিল গণহত্যা)। সেখানে খোলাহাটির কোনো-কোনো শহীদের নাম লেখা রয়েছে। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!