You dont have javascript enabled! Please enable it!

গণকপাড়া গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর)

গণকপাড়া গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর) সংঘটিত হয় ২৪শে মে। পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা সংঘটিত এ গণহত্যায় ১৭ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। ২৪শে মে দুপুর ছুঁই-ছুঁই। পাকসেনাদের একটি গানবোট গণকপাড়া স্কুলের কাছে ভেড়ে। তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকারদের সহায়তায় তারা গ্রামের ১৮ জন সাধারণ মানুষকে সতীশ শেখর রায়ের বাড়ির দক্ষিণ পাশে জমির মধ্যে জড়ো করে দড়ি দিয়ে বাঁধে। এরপর হানাদার বাহিনী গুলি করে তাদের হত্যা করে। গুলিবিদ্ধ বিনোদ মণ্ডল বেঁচে যান। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্যদের রক্তাক্ত লাশের সঙ্গে তিনি মিলে যান। এ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ধীরেন্দ্রনাথ হালদার। তিনি কোনোরকম পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। বাঁশতলার ধীরেন্দ্রনাথ হালদার তার শয্যাশায়ী পিতা ষষ্ঠী চরণ হালদারকে রেখে মাটির বড় চাড়ির মধ্যে লুকিয়ে ছিলেন। পাকসেনারা যখন তার বাড়িতে প্রবেশ করে, তখন চাড়ির ঢাকনা তুলে বাবাকে দেখছিলেন। মুহূর্তে পিতা ও পুত্র বুলেটবিদ্ধ হন। শহীদদের মধ্যে যাদের বাড়ি কাছাকাছি, তাদের পরিবারের সদস্যরা লাশ বাড়িতে নিয়ে মাটিচাপা দেয়। এলাকাবাসী বাকি ৮ জনকে একটি গণকবরে সমাহিত করে।
গণকপাড়া গণহত্যায় শহীদ ১৭ জন হলেন— গণকপাড়া গ্রামের যাদব বেপারী (পিতা বসন্ত বেপারী), অমূল্য বেপারী (পিতা শিশুলাল বেপারী), নকুলেশ্বর মণ্ডল (পিতা রামসাগর মণ্ডল), কৃষ্ণকান্ত বেপারী (পিতা ব্রজেন্দ্রনাথ বেপারী), ননী গোপাল মৃধা (পিতা হরিচরণ মৃধা), কালীচরণ রায় (পিতা রঘুনাথ রায়), ললিত কুমার বেপারী (পিতা কাৰ্ত্তিক চন্দ্ৰ বেপারী), অনন্ত হালদার (পিতা দুর্গাচরণ হালদার), চিত্ত রায় (পিতা মুকুন্দ রায়), সুখরঞ্জন বণিক (পিতা কাৰ্ত্তিক বণিক), বিজয় রায় (পিতা চিত্ত রায়), লেবু, সখানাথ এদবর (পিতা কালীচরণ এদবর, গয়েশকাঠি; মুদি দোকানদার, গণকপাড়া), করফা গ্রামের দুই সহোদর কুশ ও লব (পিতা অশ্বিনী মণ্ডল), উপেন্দ্রনাথ হালদার ও ঈশান (পিতা বৈকুণ্ঠ, বাঁশতলা)। [হাবিবুল্লাহ রাসেল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!