বীর বিক্রম খিজির আলী
খিজির আলী, বীর বিক্রম (জন্ম ১৯৩৫) দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৩৫ সালে খুলনার হেলাতলায় তাঁর জন্ম। তাঁর মাতার নাম মতি বিবি এবং পিতার নাম জাহান বক্স।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে খিজির আলী ২৭শে এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধে যোগদান
করেন। প্রথমে তিনি খুলনার ক্লে রোডের বাসিন্দা গোলাম রসুলের বন্দুকের দোকান থেকে অস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনীর দোসর বিহারিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। পরবর্তীতে ভারতের ২৪ পরগনার টাকি ও ব্যারাকপুরের ক্যাম্পে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর এম এ জলিলের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেন। বিভিন্ন স্থানে সফল অপারেশন শেষে তাঁর ওপর খুলনার মংলা বন্দর অপারেশনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। অপারেশন জ্যাকপট-এর অংশ হিসেবে ১৫ই আগস্ট তিনি কয়েকজন নৌ-কমান্ডো নিয়ে মংলা বন্দরে অবস্থানরত এস এস লাইটনিংসহ কয়েকটি জাহাজে সফল অপারেশন পরিচালনা করে তা ধ্বংস করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি কৈলাসগঞ্জের -রাজাকার- বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৬ জন রাজাকারকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করেন। তিনি আশাশুনি থানা ও হাইস্কুল ক্যাম্প এবং চাপড়াতেও সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। খুলনা ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলের বেশকিছু যুদ্ধে তিনি বীরত্বের পরিচয় দেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযোদ্ধা খিজির আলীকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি ৫ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম জরিনা বেগম। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড