খিদুর-গন্ধবপুর-আজমেরু-ভুজবল গণহত্যা (মৌলভীবাজার সদর)
খিদুর-গন্ধবপুর-আজমেরু-ভুজবল গণহত্যা (মৌলভীবাজার সদর) সংঘটিত হয় ১লা মে। এতে কমপক্ষে ২৫ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান।
মৌলভীবাজার শহরের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন মোস্তফাপুর। এ ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম খিদুর, গন্ধর্বপুর ও আজমেরু। আজমেরুর নিকটবর্তী গ্রাম ভুজবল। ভুজবল গিয়াসনগর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত।
মোস্তফাপুর ইউনিয়নের কুখ্যাত ডাকাত মোহাম্মদ আলী – মুসলিম লীগ নেতা ইনাম উল্লাহর বিভিন্ন অপকর্মে সহযোগিতা করত। ইনাম উল্লার মাধ্যমে ডাকাত মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে পাকসেনাদের সম্পর্ক হয়। মোহাম্মদ আলী ১লা মে একদল পাকসেনা নিয়ে উল্লিখিত ৪টি গ্রামে হানা দেয়। তারা গ্রামের হিন্দু বাড়িগুলোতে গণহত্যা চালায়। খিদুর গ্রামে তারা সহোদর রবি পাল ও খোকা পাল (পিতা রমেশ পাল) এবং অন্য দুই সহোদর দ্বিজেন্দ্র পাল ও যতীন্দ্র পাল (পিতা ভারত পাল)-কে হত্যা করে। এরপর তারা শিরিশ পাল, বিপিন পাল ও ভবই পালকে ধরে এনে মোস্তফাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে একটি কালভার্টের ওপর গুলি করে। গুলিতে শিরিশ পাল ও বিপিন পাল নিহত হন। পাকসেনারা খিদুর থেকে গন্ধর্বপুর গ্রামে ঢুকে হোমিও চিকিৎসক ডা. প্রভাত চন্দ্র রায়, তার দুই ছেলে বুলু রায় ও সিতু রায়কে হত্যা করে। গন্ধর্বপুরের পর আজমেরু গ্রামে তারা বৃদ্ধ ও অসুস্থ পিয়ারী মোহন দেবনাথ (পিতা ভোলানাথ দেবনাথ), গোপেশ চন্দ্র দাশ, তার স্ত্রী মানদা দাশ (পিতা লোকনাথ দাশ) ও তার ছেলে বারীন্দ্র চন্দ্র দাশ (পিতা গোপেশ চন্দ্র দাশ)-কে হত্যা করে। এ বাড়িতে তারা মানদা দাশের মাকেও গুলি করে হত্যা করে। আজমেরু গ্রামে হত্যাকাণ্ডের পর পাকসেনারা গিয়াসনগর ইউনিয়নের ভুজবল গ্রামে গিয়ে সতু মালাকার (পিতা দীগেন্দ্র মালাকার), অনিল মালাকার (পিতা আদিত্য মালাকার), শুধাংশু সূত্রধর (পিতা সুরেন্দ্রে সূত্রধর) ও বাকপ্রতিবন্ধী রমন সেনগুপ্তকে হত্যা করে। এ ৪ গ্রামে কমপক্ষে ২৫ জন নিরীহ মানুষ গণহত্যার শিকার হন। [আবদুল হামিদ মাহবুব]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৩য় খণ্ড